পাহাড়ে এবার জিটিএ ভোট হবে, হবে পঞ্চায়েত ভোটও। তখন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই পাহা়ড়ের আরও উন্নয়নে সামিল হবেন। মঙ্গলবার দার্জিলিং ম্যালে প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে সব রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দার্জিলিঙে হিল ইউনিভার্সিটি গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়ে বিধবা ভাতা সহ একগুচ্ছ সরকারি প্রকল্পের খুঁটিনাটি দিকও বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করেই বলেন, “একটি নির্দিষ্ট দল ভোটের আগে ভুল বোঝাতে পাহাড়ে আসে। ভোট হয়ে যাওয়ার পর তাদের আর দেখা পাওয়া যায় না। তারা নির্বাচনের আগে অন্য কথা বলে, আর নির্বাচন পেরিয়ে গেলে অন্য কথা বলে। আমরা নির্বাচনের আগে বলেছিলাম লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, দুয়ারে রেশন, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড করব, করে দেখিয়ে দিয়েছি।”
উত্তরপ্রদেশ সহ ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরপরই লাগাতার দামবৃদ্ধি হচ্ছে পেট্রোপণ্যের। পাহাড়বাসীকে সে কথা স্মরণ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, একমাসও হয়নি তার মধ্যেই দাম বেড়ে চলেছে ডিজেল, পেট্রল সহ রান্নার গ্যাসের। সাধারণ মানুষের নাভিঃশ্বাস উঠছে। কী খাবে লোকে, বিজেপি খাবে, না দিল্লির লাড্ডু খাবে।
বাংলার সঙ্গে বিজেপি কোনও পেয়ার মহবৎ নেই বলেও মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পদ্মশিবিরের উদ্দেশে তোপ দেগে বলেন, ওদের শুধু একটাই কাজ, হিংসা-অশান্তি বলে চিল চিৎকার জুড়ে জনতার দৃষ্টি ও মনটা ঘুরিয়ে দেওয়া। তাহলেই পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঘিরে আর কেউ উচ্চবাচ্চ করবে না।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ফেরত আসা শিক্ষার্থী পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ ঘিরে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানকার মেডিকেল পড়ুয়াদের রাজ্য তথা দেশে পড়ার অনুমতি খারিজ হয়ে যাওয়া ঘিরেও তোপ দেগেছেন। অনুষ্ঠানে বলেন, “ যাঁরা ইউক্রেন থেকে ফিরেছিল তাঁদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিতে চেয়েছিলাম। কেন্দ্র সেই অনুমতি দেয়নি। বহু পড়ুয়ার জীবনের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছে কেন্দ্র।”
সমতলের মতোই, পাহাড়েও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কেন্দ্র রাজ্যের সেই আবেদনও ফেলে রেখেছে । ম্যালের মঞ্চে আক্ষেপের সুরেই এদিন বলেন, “৫-৬ বছর হয়ে গেল কিন্তু অনুমতি মিলল না। এর দেশের রক্ষক নয়, বরং উল্টোটা।
পাহাড়ের সব রাজনৈতিক দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, জনতার কাজ আগে করব, তারপর রাজনীতি করব এমন শপথ নিন। আর একসঙ্গে মিলে ১০ বছর কাজ করলেই আমূল বদলে যাবে দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিক।