উত্তর ২৪ পরগনা: বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার চাকলা দেগঙ্গায় দলীয় কর্মিসভা থেকে জোরালো বার্তা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
স্পষ্ট ভাষায় নিজের অবস্থান জানিয়ে মমতা বলেন, “নিজেদের আরও সংগঠিত করতে হবে। ছাত্রযুবদের এগিয়ে দিতে হবে আমাদের। প্রাপ্য় মর্যাদা দিতে হবে সিনিয়র নেতাদের। এটা আমি বার বার বলে আসছি। পুরনো চাল ভাতে বাড়ে, আর নতুন চাল আগে বাড়ে। দু’টো চালকেই দরকার আমার। পুরনোকেও দরকার, নতুনকেও দরকার, পুরুষকেও দরকার, মহিলাকেও দরকার, ভাইয়েদেরও দরকার, দরকার বোনেদেরও। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে।”
কোর কমিটি
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পরে এ দিনের এই কর্মিসভা থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় কী বার্তা দেন সেদিকেই নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। সামনেই লোকসভা ভোট। আর এই জেলায় সবচেয়ে বেশি লোকসভা ও বিধানসভা আসন রয়েছে।
কর্মিসভার মঞ্চ থেকে একটি কোর কমিটি গঠন করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর ২৪ পরগনায় সাংগঠনিক জেলাগুলির দায়িত্ব দেওয়া হয় এক এক জন হেভিওয়েট নেতাকে। প্রতি দশ দিন অন্তর কোর কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে, স্পষ্ট জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে নির্মল ঘোষকে। বসিরহাট ও দমদমের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুজিত বোসকে। ব্যারকপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পার্থ ভৌমিককে এবং হাবড়া সংলগ্ন এলাকা দেখবেন নারায়ণ গোস্বামী। এছাড়াও কমিটিতে থাকছেন শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, রথিন ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, তাপস রায়, বীণা মণ্ডল, নুরুল ইসলাম, মমতাবালা ঠাকুর, তাপস দাসগুপ্ত-সহ আরও অন্যান্য নেতৃত্ব।
বিজেপি-কে আক্রমণ
উত্তর ২৪ পরগনায় একাধিক কর্মসূচি ছিল মমতার। প্রথমে চাকলা লোকনাথ মন্দিরে যান তিনি। এর পর বেশ কয়েকটি প্রকল্পের সূচনা করেন। তার পর দেগঙ্গায় দলের কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি। সেখানেই ওঠে ঠাকুরবাড়ি ও মতুয়া প্রসঙ্গ। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঠাকুরবাড়ির উন্নয়ন আমরা করেছি। সৌন্দর্যায়ন আমরা করেছি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় আমরা করেছি।” এর পরই বিজেপিকে নিশানা করেন তিনি। বলেন, “কেউ তো করেনি। শুধু ভোটের আগে মতুয়াবাড়ি ঘুরে এসে বড় কথা বলে। সবটাই ভোটের জন্য।”
নাগরিকত্ব ইস্যু তুলেও এদিন বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মতুয়াদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনার প্রত্যেকে নাগরিক। নাহলে রেশন কার্ড, প্যান কার্ড কারও থাকতও না।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সমাজে সমাজে ভেদাভেদ তৈরি করতেই নাগরিকত্ব আইনের নামে ছলনা করতে চাইছে বিজেপি।