বলিউড, পঞ্জাবি এবং দক্ষিণী সিনেমা ও টেলিভিশনে কাজের জন্য পরিচিত অভিনেতা মুকুল দেব আর নেই। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। মৃত্যুর কারণ এখনো প্রকাশ্যে আসেনি।
অভিনেতা বিন্দু দারা সিং এক্স-এ লিখেছেন, “বিশ্রামে থাকো ভাই #MukulDev! তোমার সঙ্গে কাটানো সময় সবসময় স্মৃতিময় হয়ে থাকবে। #SonOfSardaar2 তোমার বিদায়ী কাজ, যেখানে তুমি হাসি আর আনন্দ ছড়িয়ে দর্শকদের মন জয় করবে!”
তিনি আরো জানিয়েছেন, “মুকুল তাঁর বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকে অনেকটা একাকী হয়ে গিয়েছিল। কাউকে তেমন দেখা করত না, বাড়ির বাইরেও খুব কম বেরোত। শেষের দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায় এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। আমি তাঁর ভাই এবং সমস্ত প্রিয়জনের প্রতি সমবেদনা জানাই। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ ছিলেন, আমরা তাঁকে খুব মিস করব।”
অভিনেত্রী দীপশিখা নাগপাল বলেন, তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে মুকুল আর নেই।
মনোজ বাজপেয়ি লিখেছেন, “আমি কী অনুভব করছি তা শব্দে বলা সম্ভব নয়। মুকুল ছিল আমার ভাইয়ের মতো, একজন শিল্পী যার উষ্ণতা ও আবেগ অতুলনীয় ছিল। খুব তাড়াতাড়ি চলে গেল… অনেক কম বয়সে। তাঁর পরিবার ও প্রিয়জনদের জন্য প্রার্থনা করছি। মিস করব তোমায় মেরি জান… আবার দেখা হবে, ওম শান্তি।”
মুকুল দেব ১৯৭০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হিন্দি, পঞ্জাবি, তেলগু, তামিল, কন্নড়, বাংলা ও মালয়ালম সিনেমা এবং টেলিভিশনে কাজ করেছেন। ১৯৯৬ সালে ‘মুমকিন’ নামক টিভি সিরিজ দিয়ে তিনি অভিনয় জীবন শুরু করেন এবং একই বছর ‘দস্তক’ সিনেমায় সুষ্মিতা সেনের সঙ্গে বড় পর্দায় অভিষেক হয়।
‘যমলা পাগলা দিওয়ানা’, ‘সন অফ সরদার’, ‘আর… রাজকুমার’ এবং ‘জয় হো’-র মতো জনপ্রিয় সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। দিল্লির সেন্ট কলম্বা’স স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষে রায়বেরিলির ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব অ্যাভিয়েশন থেকে অ্যারোনটিক্সে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
২০২১ সালে তিনি হিন্দুস্তান টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “২৫ বছরের বলিউড ক্যারিয়ারটা সত্যিই দীর্ঘ এবং সন্তোষজনক ছিল। শুরুটা যেমন হয়েছিল, তারপর যে কাজগুলো করেছি — টিভি, হিন্দি সিনেমা, আবার পরে আঞ্চলিক ভাষার কাজ — সব মিলিয়ে আমি খুশি। আজকের প্রতিযোগিতার দিকে তাকালে মনে হয় আমি মন্দ করিনি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি নিজের অজান্তেই এমন একটা জায়গা তৈরি করে ফেলেছি যেখানে মানুষ একটা চরিত্র দেখলেই ভাবে, এটা তো মুকুল দেবই করতে পারবে। ‘যমলা পাগলা দিওয়ানা’-র মতো চরিত্রে ফোন আসে আর আমি জানি, ওরা আর কাউকে ভাবেইনি।”
তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যুতে সিনেমা জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।