বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র অন্তত ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ আগেই দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যকে ছয় সপ্তাহের সময়সীমা দেওয়া হলেও তা মেনে বকেয়া টাকা দেওয়া হয়নি। বরং রাজ্য আদালতের কাছে আরও ছ’মাস সময় চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলে—নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ে কেন টাকা দেওয়া গেল না?
রাজ্য সরকারের আইনজীবী আদালতে জানান, তারা নির্দেশ কার্যকর করতে চায়, কিন্তু বিপুল অর্থের প্রয়োজন হওয়ায় সময় লাগছে। সেই অর্থ জোগাড় করাও কঠিন, কারণ ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে ডিএ বাবদ কোনও বরাদ্দ নেই। রাজ্যের দাবি, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, এটি মৌলিক অধিকার নয় বরং একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত।
সোমবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও বিচারপতি পি কে মিশ্রের বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, কেন মামলার কোনও পক্ষই শুনানির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়? রাজ্যের তরফে আরও সময় চাওয়া হলে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘আজকের দিনটা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। এখনই শুনানি শুরু করুন।’’ তবে মামলার অন্যান্য পক্ষ সময় চাওয়ায় আদালত জানিয়ে দেয়, মঙ্গলবারই শুনানি হবে এবং সব পক্ষকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
ডিএ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য আগেই জানিয়েছিল, মোট বকেয়া ডিএ কর্মচারীদের জন্য ১১ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, পেনশনভোগীদের জন্য ১১ হাজার ৬১১ কোটি টাকা এবং অন্যান্য সংস্থার কর্মীদের জন্য ১৮ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। সব মিলিয়ে এই অঙ্ক ৪০ হাজার কোটির বেশি। এই টাকা দিতে গেলে রাজ্যের আর্থিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে বলেই যুক্তি দিয়েছে তারা।
তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, অন্তর্বর্তী নির্দেশ মেনে অন্তত ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ রাজ্যকে মিটিয়েই দিতে হবে। সেই সময়সীমা ছিল ২৭ জুন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও তা কার্যকর না হওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য। মামলার চূড়ান্ত শুনানি হবে অগস্ট মাসে। তার আগে মঙ্গলবার ফের হবে শুনানি।