রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা করা বারাসত-নোয়াপাড়া মেট্রো প্রকল্প নতুন করে গতি পেল। ইতিমধ্যেই নোয়াপাড়া থেকে মাইকেলনগর পর্যন্ত পাতালপথের কাজ শেষের মুখে, এবং আগামী বছর তার উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। এবার সেই মেট্রোরেল প্রকল্পে বারাসত পর্যন্ত সম্প্রসারণের উদ্যোগে আশার আলো দেখছেন উত্তর শহরতলির বাসিন্দারা।
সূত্রের খবর, সম্প্রসারিত মেট্রো প্রকল্পের অংশ হিসেবে মধ্যমগ্রাম ও বারাসতের বিভিন্ন এলাকায় সয়েল টেস্ট শুরু করতে চায় মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে মধ্যমগ্রামের ৪টি এবং বারাসত শহরের ৫টি জায়গায় পরীক্ষা চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট পুরসভার কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। দুই পুরসভা ইতিমধ্যেই অনুমতি দিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
প্রস্তাবিত এই পাতালমেট্রো প্রকল্পটি মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগটি নোয়াপাড়া থেকে শুরু হয়ে দমদম ক্যান্টনমেন্ট, যশোর রোড, বিরাটি হয়ে মাইকেলনগর পর্যন্ত যাবে। এর মধ্যে নোয়াপাড়া ও দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন দু’টি উত্তোলিত পথে তৈরি হচ্ছে, বাকি অংশ হবে পাতালপথে।
দ্বিতীয় ভাগে মাইকেলনগর থেকে বারাসত পর্যন্ত পাতালমেট্রো সম্প্রসারিত হবে। জমিজট এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণে আগে এই অংশের কাজ থমকে ছিল। অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুরো পথটি পাতালপথে তৈরি করা হবে। এই অংশের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১১.৮৫ কিমি।
এই রুটে প্রস্তাবিত স্টেশনগুলি হল: বিধানপল্লি, মধ্যমগ্রামের চৌমাথা সংলগ্ন এলাকা, হৃদয়পুর, বারাসত বিদ্যাসাগর স্টেডিয়াম, কাছারি ময়দান, বারাসত ইএমইউ কারশেড, যশোর রোড সংলগ্ন জয়পুর এবং ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সুরিপুকুর। সুরিপুকুরে এই মেট্রো রুটের শেষ স্টেশন হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি জয়পুরে একটি ভূগর্ভস্থ মেট্রো ডিপো তৈরির ভাবনাও চলছে।
মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাথমিক সার্ভে ও রূপরেখা তৈরির পর সয়েল টেস্টের কাজ শুরু হবে। তারপরে ধাপে ধাপে নির্মাণকাজে অগ্রগতি হবে।
বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই প্রকল্প সম্ভব হয়েছে বারাসতের সাংসদের তৎপরতার জন্য। আমরা সয়েল টেস্টের জন্য অনুমতি দিয়েছি। ২০৩০ সালকে লক্ষ্যে রেখেই মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ এগোচ্ছে।”
প্রতিদিন বারাসত থেকে কলকাতা যাতায়াত করেন প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ। মেট্রো সম্প্রসারণ শেষ হলে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার ওপর চাপ অনেকটাই কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে বিমানবন্দর সংলগ্ন যানজটও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।