তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের মঞ্চ থেকে ফের সরব হলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি, বামফ্রন্ট থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন—কাউকেই ছাড়লেন না। এসআইআর এবং এনআরসি প্রসঙ্গ টেনে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “জীবন থাকতে কারও ভোটাধিকার কাড়তে দেব না।”
মমতার দাবি, বিহারে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) শুরু হওয়ার পর বাংলায়ও ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে এনআরসি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি সরকার ভোটাধিকার খর্ব করতে চাইছে। পাশাপাশি আমলাদের ভয় দেখানো হচ্ছে, নতুন ভোটারদের “ললিপপ” দেখানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আমরা ললিপপ দিই বাচ্চাদের হাতে। ১৮ বছরের নতুন ভোটারদের হাতে ললিপপ দিই না। গণতান্ত্রিক অধিকারই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।”
ভোটের আগে বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তাও দেন তিনি। বলেন, “আপনাদের জোর জুলুম বাংলা মানছে না, মানবে না। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়েনি, ছাড়বেও না।”
প্রসঙ্গ ওঠে ভিন রাজ্যে শ্রমিক হেনস্তারও। মমতা অভিযোগ করেন, “বাংলার শ্রমিকদের বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে অত্যাচার করা হচ্ছে। অথচ গরিব মানুষ আমার হৃদয়। আমি জাত-পাত মানি না, তাঁদের ভালোবাসি।”
অন্যদিকে, কেরলের পাঠ্যবইয়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে “ভুল তথ্য” পড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। মমতার দাবি, বামফ্রন্ট শাসিত কেরলে নেতাজিকে ইংরেজদের ভয়ে পালিয়ে যাওয়া নেতা হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বামেদের রাজনৈতিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
নির্বাচন কমিশনকেও সরাসরি আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও কমিশনের চেয়ারকে সম্মান জানান তিনি, তবে কটাক্ষ করে বলেন, “সব এজেন্সিকে সম্মান করি। কিন্তু বড়রা যদি ললিপপ খায় তাহলে মানায় না।”
বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা ভোট। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে নির্বাচনী সুর বেঁধে দেওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের মঞ্চ থেকেই আরও একবার বিজেপি-বামেদের বিরুদ্ধে ভোট যুদ্ধে সুর চড়ালেন।