প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড় স্বস্তি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের বেঞ্চে তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। এর ফলে এই মামলাসহ সবকটি মামলাতেই জামিন পেয়ে গেলেন তিনি। তবে এখনও তাঁর জেল থেকে মুক্তি পাওয়া স্পষ্ট নয়। কারণ, বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে তিনি জেলে থাকতে পারেন।
সম্প্রতি সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় শুনানি শেষ হলেও রায় সংরক্ষিত রেখেছিলেন বিচারপতি। অবশেষে শুক্রবার হাই কোর্ট পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করে। তবে আদালত কিছু শর্তও বেঁধে দিয়েছে।
🔹 আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী—
- পাসপোর্ট জমা দিতে হবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
- তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে মাসে একবার দেখা করতে হবে।
- নিম্ন আদালতের এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না।
তবে এসব শর্ত পূরণ করলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেলমুক্তি এখনই নিশ্চিত নয়। কারণ, অন্য একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট গত ১৮ আগস্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ১ মাসের মধ্যে চার্জ গঠন এবং ২ মাসের মধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করতে হবে। এখনও পর্যন্ত ৮ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৫ জনের সাক্ষ্য না হওয়া পর্যন্ত জেল থেকে ছাড়া পাবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করে ইডি। এরপর দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়। পরে সিবিআইও আলাদা মামলা দায়ের করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ‘শো অ্যারেস্ট’ করে। সেই থেকেই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি তিনি।
এর আগে ইডির মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন পার্থ। পরে অন্যান্য মামলাতেও নিম্ন আদালত জামিন দেয়। কিন্তু সিবিআইয়ের মামলার কারণে তাঁর জেলমুক্তি আটকে ছিল। এবার প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় হাই কোর্টেও জামিন পেয়ে গেলেন তিনি।
তবে সব মামলায় জামিন পেলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুক্তি নির্ভর করছে নিম্ন আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর। এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ বাকি থাকায়, তাঁকে আপাতত জেলেই থাকতে হতে পারে বলেই মনে করছে আইনি মহল।