অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার প্রাক্তন সিপিএম সম্পাদক ও প্রবীণ বামপন্থী নেতা দীপক সরকার প্রায়ত।
সোমবার রাত ১১টা ১৫ মিনিট নাগাদ মেদিনীপুর শহরের নিজ বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রয়াণকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন কিছুদিন ধরে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যাতেও ঘণ্টাখানেক পার্টি অফিসে সময় কাটিয়েছিলেন এই বর্ষীয়ান কমরেড। এরপর বাড়ি ফিরে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর।
মঙ্গলবার সকালে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “কমরেড দীপক সরকারের মতো সংগ্রামী নেতার প্রয়াণ আমাদের কাছে এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর জীবন ও আদর্শ প্রেরণা হয়ে থাকবে আগামী প্রজন্মের কাছে।”
জীবনের সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা
দীপক সরকার ছিলেন অবিভক্ত মেদিনীপুরের বাম রাজনীতির এক উজ্জ্বল মুখ।
রাজনৈতিক জীবনের শুরু শ্রমিক আন্দোলনের মাটিতে, পরে শিক্ষক সংগঠনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। মেদিনীপুর কলেজের অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও তাঁর আসল পরিচয় বাম রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত এক জনযোদ্ধা।
জেলা সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব সামলেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরে। সংগঠন গঠন, আন্দোলন ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তাঁর ভূমিকা আজও স্মরণীয়।
পরে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবেও সক্রিয় ছিলেন তিনি।
বয়সের ভারে গত কয়েক বছর তেমন সক্রিয় না থাকলেও, পার্টি অফিসে নিয়মিত উপস্থিতি ছিল তাঁর অভ্যাস। দলের প্রতি নিষ্ঠা ও সংগঠনের প্রতি ভালোবাসা তাঁকে শেষ বয়স পর্যন্ত সক্রিয় রেখেছিল।
দলীয় শ্রদ্ধা ও দেহদান
দলীয় কর্মীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুরে সিপিএম জেলা কার্যালয়ে তাঁর দেহে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এরপর পরিবার ও দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেহদানের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে তাঁর অন্তিম যাত্রা। প্রবীণ বাম নেতার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বাম শিবিরে। রাজ্যজুড়ে বাম কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে গভীর শোকের সঞ্চার হয়েছে।