পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision – SIR) শুরু করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার বিকেল ৪টেতে দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবে কমিশন।
বিশেষত আগামী বছর যেসব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, সেই সব রাজ্যে প্রথম দফায় শুরু হচ্ছে এই বিশেষ সংশোধনের কাজ। সূত্র অনুযায়ী, এই তালিকায় বাংলা, তামিলনাড়ু, কেরল, অসম এবং পুদুচেরি-সহ মোট ১০ থেকে ১৫টি রাজ্য রয়েছে।
কমিশন সূত্রে খবর, সোমবার ঘোষণার পর মঙ্গলবার থেকেই মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু হবে। তবে বুথ লেভেল অফিসাররা (BLO) ১ নভেম্বর থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিতরণ করবেন।
প্রথমে দিল্লি থেকে ফর্মের সফ্ট কপি পাঠানো হবে নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিকদের (ERO) পোর্টালে।
তারপর শুরু হবে ছাপার কাজ — প্রতি ভোটারের জন্য দুটি ফর্ম ছাপা হবে।
বর্তমানে বাংলার ভোটার সংখ্যা প্রায় ৭.৬৫ কোটি, অর্থাৎ কমিশন প্রায় ১৫.৩ কোটি ফর্ম ছাপাবে।
একটি ফর্ম থাকবে ভোটারের কাছে, অন্যটি BLO নিয়ে যাবেন জমা দিতে।
ফর্মে ভোটারের নাম, EPIC নম্বর, ঠিকানা, জন্মতারিখসহ প্রায় ৯০ শতাংশ তথ্য পূর্বনির্ধারিতভাবে ছাপা থাকবে।
কমিশনের বক্তব্য, “বিশেষ নিবিড় সংশোধনের মাধ্যমে প্রতিটি বৈধ ভোটারের নাম নিশ্চিত করা হবে এবং একটিও ভুয়ো নাম যেন তালিকায় না থাকে, তা নিশ্চিত করাই এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য।”
উল্লেখ্য, বাংলায় শেষবার SIR হয় ২০০২ সালে।
দেশে প্রথমবার ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ শুরু হয় বিহারে।
সেই সময়ে প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ যায় তালিকা থেকে, যা পরে সংশোধিত হয়।
কমিশন জানিয়েছে, বিহারের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এখন সারা দেশে ধাপে ধাপে একই কাজ চলছে।
বাংলাতেও প্রাথমিকভাবে একই প্রক্রিয়া ও একই নথিপত্রের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র (বিহারের তালিকা অনুযায়ী):
- সরকারি চাকরির পরিচয়পত্র / পেনশন কার্ড
- ১ জুলাই ১৯৮৭ সালের আগে কোনও সরকারি/ব্যাংক/এলআইসি নথি
- জন্ম শংসাপত্র
- পাসপোর্ট
- মাধ্যমিক বা তার বেশি শিক্ষাগত শংসাপত্র
- রাজ্য সরকারের বাসস্থান সনদ
- ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট
- জাতিগত শংসাপত্র
- ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস (যদি থাকে)
- পারিবারিক রেজিস্টার (স্থানীয় প্রশাসনের)
- জমি বা বাড়ির দলিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে আধার কার্ড পরিচয়পত্র হিসাবে দেখানো যাবে, তবে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসাবে নয়।