ভোটের ঠিক তিন মাস আগে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু হওয়া ঘিরে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা। মঙ্গলবার ধর্মতলায় সংবিধানের কপি হাতে প্রতিবাদ মিছিলে পা মিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক প্রশ্ন তুললেন নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে।
তাঁর প্রশ্ন, “ভোটের আগে হঠাৎ এসআইআর কেন? কেন শুধু বাংলায়? অসমে, নাগাল্যান্ডে বা ত্রিপুরায় হচ্ছে না কেন? বাংলায় রোহিঙ্গারা এলে কোথা থেকে আসে?”
ধর্মতলায় আম্বেদকর মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে সংবিধানের কপি হাতে মিছিল শুরু করেন মমতা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলর, মতুয়া প্রতিনিধি এবং একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। প্রায় ৪ কিলোমিটার হেঁটে তাঁরা পৌঁছন জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির প্রতিবাদ মঞ্চে, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি নিশানা করেন নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে।
তৃণমূল নেত্রীর কটাক্ষ, “কুর্সিবাবুদের (নির্বাচন কমিশন) জিজ্ঞেস করতে চাই—রোহিঙ্গারা বাংলায় আসে কোথা থেকে? ২০০১ সালের পর বাংলায় শেষ এসআইআর হয়েছিল। তখনও ভোট হয়নি। আজ হঠাৎ কেন? মোদীবাবু আর অমিত শাহকে খুশি করতেই কি ইতিহাস গড়ছেন কুর্সিবাবু?”
তিনি আরও বলেন, “একটা নাম বাদ গেলেই রাজ্য জুড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। বাবা-মায়ের নাম না থাকলে কি নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে আবার জন্মাতে হবে? কমিশনের তালিকায় গন্ডগোল হলে দায় নেবে কে? আমি চেয়ারকে সম্মান করি, কিন্তু দালালিরও একটা সীমা আছে।”
বিজেপির পালটা তোপ
তৃণমূলের এই আক্রমণের জবাবে মুখ খুলেছেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, “কমিশন তো পরিষ্কার বলেছে, একজন ভারতীয় নাগরিকের নামও বাদ যাবে না। যারা ভারতীয় নন, তাদের নাম বাদ যাবে। তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত চিন্তিত কেন? এদের থেকে কী পান?”
তিনি আরও বলেন, “কমিশন সময় সময় নানা পরিবর্তন করে থাকে—ব্যালট থেকে ইভিএম হয়েছে, সেটাও কমিশনের সিদ্ধান্ত। তৃণমূল এখন জলাতঙ্কের মতো এসআইআর আতঙ্কে ভুগছে।”