কখনও সীমা, কখনও সুইটি, কখনও আবার সরস্বতী! নাম আলাদা হলেও ছবিটি এক। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, হরিয়ানার ভোটার তালিকায় একই নারীর ছবি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে একাধিক ভুয়ো ভোটার কার্ড — আর সেই ছবিটি নাকি এক ব্রাজ়িলিয়ান মডেলের!
বুধবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক ভোটচুরির অভিযোগ আনলেন রাহুল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘হরিয়ানার বিধানসভা ভোটে বড় জালিয়াতি হয়েছে। বিজেপি ভুয়ো ভোটার ব্যবহার করে জিতেছে, আর নির্বাচন কমিশন সব জানত।’’
রাহুলের দাবি, ২০২৪ সালের হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসা বিজেপি আসলে ‘পরিকল্পিত জালিয়াতি’র মাধ্যমে ভোটচুরি করেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি দেখান কিছু ভোটার কার্ড, যেখানে ভিন্ন ভিন্ন নাম থাকলেও ছবি এক—একই ব্রাজ়িলিয়ান মডেল ম্যাথুজ ফেরেরো-র।
কংগ্রেস নেতার দাবি, অন্তত ২২টি ভুয়ো ভোটার কার্ডে ওই মডেলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘হরিয়ানায় দু’কোটি ভোটারের মধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষই ভুয়ো। অর্থাৎ মোট ভোটারের ১২ শতাংশই জাল! এই ভুয়ো ভোটারদের মাধ্যমেই বিজেপি ভোট চুরি করেছে।’’
রাহুল আরও বলেন, ‘‘গণতন্ত্রকে নষ্ট করার এই পরিকল্পনা বিজেপি আগেই করেছিল। কংগ্রেসকে হারাতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তাদের আঁতাত হয়েছিল।’’
তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের আগের সব বুথফেরত সমীক্ষা বলছিল কংগ্রেস জিতবে। তাহলে ফল প্রকাশের পর উল্টো ছবি দেখা গেল কীভাবে?’’
আরও এক বিস্ফোরক দাবি রাহুলের — ‘‘হরিয়ানার ইতিহাসে প্রথমবার পোস্টাল ব্যালটের ফল প্রকৃত ভোটের সঙ্গে মেলেনি। এটা স্পষ্ট প্রমাণ যে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, রাহুল এর আগেও বিভিন্ন রাজ্যে ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে এবার তাঁর অভিযোগ আরও নির্দিষ্ট ও চিত্রসহ। কয়েক দিন ধরেই তিনি বলছিলেন, ‘এইচ-বোমা’ ফাটাবেন—বুধবার দিল্লির এই সাংবাদিক সম্মেলনেই সেই ‘বোমা’ ফাটালেন কংগ্রেস নেতা।
তিনি দেখান ভোটার তালিকার একাধিক এন্ট্রি—যেখানে নাম আলাদা, কিন্তু ছবিতে একই বিদেশি মডেল। তাঁর কথায়, “এটাই প্রমাণ করে, নির্বাচনের পুরো ব্যবস্থাই বিকৃত করা হয়েছে।”
রাহুলের অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিজেপির তরফে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে কংগ্রেসের বক্তব্য, ‘‘এটা শুধু এক রাজ্যের বিষয় নয়, গণতন্ত্রের সুরক্ষার প্রশ্ন।’’