নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই দুধের দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের উপর পড়ল নতুন চাপ। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পরিচালিত ‘বাংলার ডেয়ারি’-র দুধের দাম একলাফে বেড়ে গিয়েছে প্রতি লিটারে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত। সোমবার থেকেই কার্যকর হয়েছে এই নতুন মূল্য।
ফলে এখন থেকে এক লিটার দুধ কিনতে বাড়তি টাকা গুনতে হবে ক্রেতাদের। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি, যাঁদের জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় দুধ একটি অপরিহার্য উপাদান।
নতুন দাম কত?
| দুধের ধরন | পুরনো দাম (প্রতি লিটার) | নতুন দাম (প্রতি লিটার) | বৃদ্ধির পরিমাণ |
| সুপ্রিম | ₹56 | ₹60 | ₹4 বৃদ্ধি |
| তৃপ্তি | ₹52 | ₹54 | ₹2 বৃদ্ধি |
| স্বাস্থ্যসাথী ডবল টোন | ₹46 | ₹48 | ₹2 বৃদ্ধি |
একই অনুপাতে প্রতিটি ব্র্যান্ডের ৫০০ মিলিলিটার প্যাকেটের দামও বেড়েছে। তবে ঘি, পনির, দইয়ের মতো দুধজাত খাদ্যপণ্যের দাম আপাতত অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দামবৃদ্ধির পিছনে রয়েছে একাধিক কারণ।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “চলতি বছর অতি বৃষ্টির কারণে বহু ফসল নষ্ট হয়েছে। গরুর খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, দুধ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের বাজারমূল্যও হু হু করে বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারসাম্য রক্ষা করতেই দুধের দাম বাড়ানো ছাড়া বিকল্প ছিল না।”
তিনি আরও জানান, “রাজ্য সরকার সর্বদা চায়, দুধের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে যাতে সাধারণ মানুষ অতিরিক্ত সমস্যায় না পড়েন। তাই বৃদ্ধি সীমিত রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।”
দুধের এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে ক্রেতাদের মধ্যে। কলকাতার নিউ আলিপুরের বাসিন্দা সুচরিতা ঘোষ, যিনি প্রতিদিন দুই লিটার দুধ কিনে থাকেন, বলেন, “প্রায় ১০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে প্রতিদিন। মাসের শেষে সেটা বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
অনেকে মনে করছেন, দুধের দাম বাড়লে পরোক্ষভাবে মিষ্টি, চা-দুধ, কফি এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যগুলির দামও বাড়তে পারে।
বাংলার ডেয়ারি রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ দুগ্ধ সরবরাহকারী সংস্থা। দুধ উৎপাদনে খাদ্য, পরিবহন, প্যাকেজিং এবং বিদ্যুতের খরচ বেড়ে যাওয়ায় খরচের ভার ক্রেতার উপর পড়েছে। গত এক বছরে ভারতজুড়ে দুধ উৎপাদনের খরচ গড়ে ৮–১০% বেড়েছে, যার প্রভাব রাজ্যেও পড়েছে বলে দাবি দপ্তরের।