প্রথম পাতা খবর ‘অবৈধ প্রমাণ মিললে বাড়ি ভেঙে দেব,’ এজরা স্ট্রিটে অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে বার্তা মেয়রের

‘অবৈধ প্রমাণ মিললে বাড়ি ভেঙে দেব,’ এজরা স্ট্রিটে অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে বার্তা মেয়রের

62 views
A+A-
Reset

এজরা স্ট্রিটে ফের বিধ্বংসী আগুন। শনিবারের অগ্নিকাণ্ডের পর রবিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পৌঁছলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। পুরনো বহুতলটি আবারও অগ্নিকাণ্ডের মুখে পড়ায় চাপে পড়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসন। ক্ষুব্ধ কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ— দীর্ঘদিন ধরেই বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এই ভবন, কিন্তু প্রশাসনের নজর নেই।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, বহুতলের ভিতর বহু বৈদ্যুতিন তার এলোমেলো অবস্থায় রয়েছে। তিনি বলেন, “সিইএসসি, দমকল, ব্যবসায়ী সমিতি, পুরসভা এবং পুলিশকে নিয়ে বৈঠক ডাব। যাতে বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারেন, এবং আগুন লাগলে দমকলের প্রবেশে কোনও বাধা না হয়।” তিনি আরও জানান, আলোচনার মাধ্যমে ঘিঞ্জি এলাকায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কীভাবে উন্নত করা যায়, সেটাই এখন প্রধান কাজ।

এই অগ্নিকাণ্ড নতুন নয়— দাবি স্থানীয় কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের। তাঁর অভিযোগ, “এই বহুতলে কমপক্ষে ২২ বার আগুন লেগেছে। বারবার দমকল, পুলিশ কমিশনারকে লিখেছি। কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সব কাগজ আমার কাছে আছে।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলা এবং অনুমোদনহীন নির্মাণের জন্য এজরা স্ট্রিট রয়ে গেছে ‘বারুদ-কৌটো’র মতো বিপজ্জনক।

যদিও মেয়র সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, অবৈধ নির্মাণ আদৌ হয়েছে কি না, তা না দেখে বলা সম্ভব নয়। “হতে পারে বেআইনি, কিন্তু বিল্ডিং বিভাগ না দেখে কিছু বলা যাবে না। এত পুরনো বাড়ি— একশো থেকে দেড়শো বছরের। তাই কতটা আইনি, কতটা বেআইনি নির্মাণ তা তদন্তের পরই জানা যাবে।” তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন— প্রমাণ মিললে অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হবে।

অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আর্থিক সাহায্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই মেয়র জানান, ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব জানার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফে।

অন্যদিকে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, আগুন কীভাবে লাগল তা ফরেনসিক রিপোর্ট ছাড়া বলা সম্ভব নয়। তিনি ব্যবসায়ীদের প্রতি আবেদন করেন— “ব্যবসা করুন, সবরকম সহযোগিতা করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক রাখুন।”

সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতায় একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা শহরবাসীর উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। প্রশাসন দাবি করেছিল— ফায়ার অডিটে কড়া নজর দেওয়া হচ্ছে। তা সত্ত্বেও এজরা স্ট্রিটের মতো ঘিঞ্জি এলাকায় আবারও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড উঠে আসায় প্রশ্ন উঠছে— ফায়ার-সেফটি ব্যবস্থা কি কার্যকর? পুরসভা ও দমকলের আগাম সতর্কতা কি যথেষ্ট?

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.