প্রথম পাতা খবর রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে অসমেও ‘বিশেষ সংশোধন’! কমিশন ‘SR’ বললেও বকলমে ‘SIR’ বলছে বিরোধীরা

রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে অসমেও ‘বিশেষ সংশোধন’! কমিশন ‘SR’ বললেও বকলমে ‘SIR’ বলছে বিরোধীরা

20 views
A+A-
Reset

দেশের বাকি ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) চললেও বাদ ছিল অসম। মাত্র ২১ দিনের মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে এবার অসমেও শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ সংশোধন’ (Special Revision) বা ‘এসআর’। সোমবার নির্বাচন কমিশনের তরফে জারি হওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। যদিও নাম ‘এসআর’, বাস্তবে এই প্রক্রিয়া SIR-এর সঙ্গে প্রায় একই। ফলে রাজনৈতিক মহলে জোরদার প্রশ্ন—তৃণমূল-সহ বিরোধীদের চাপে কি কমিশন অসমেও সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু করতে বাধ্য হয়েছে?

কী বলা হয়েছে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে?

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, অসমে বিশেষ সংশোধনের সময়সূচি নিম্নরূপ—

  • ১৮ নভেম্বর–২১ নভেম্বর: নির্বাচন কর্মীদের প্রশিক্ষণ
  • ২২ নভেম্বর–২০ ডিসেম্বর: বাড়ি বাড়ি গিয়ে BLO-দের ভেরিফিকেশন, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের পুনর্বিন্যাস, ভোটার কার্ড সংশোধন
  • ২৭ ডিসেম্বর: খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ
  • ২৭ ডিসেম্বর–২২ জানুয়ারি ২০২৬: অভিযোগ জানানোর সময়
  • ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৬: চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ

কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, ‘ডি-ভোটার’ বা সন্দেহভাজন ভোটারদের (D-Voter) নাম-ঠিকানা পরিবর্তন এই বিশেষ সংশোধনে করা হবে না। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের অনুমতি ছাড়া তাঁদের নাম কোনওভাবেই বাদ দেওয়া হবে না।

আগে অসম কেন বাদ পড়েছিল?

২৭ অক্টোবর যখন বাংলা-সহ ১২ রাজ্যে SIR ঘোষণা করা হয়, তখন অসমকে তালিকা থেকে বাদ রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সে সময় জানান—

  • অসমে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে NRC প্রায় শেষের পথে
  • রাজ্যের নিজস্ব নিয়মকানুন রয়েছে
  • তাই অসমের জন্য আলাদা নির্দেশিকা ও আলাদা তারিখে সংশোধন শুরু হবে

তখনই কমিশন জানিয়ে দেয়, NRC-এর কাজ শেষ হলেই অসমেও বিশেষ সংশোধন করা হবে। কমিশনার দাবি করেছিলেন, NRC-এর ৯৫% কাজ সম্পন্ন হয়েছে

কিন্তু এবার SR ঘোষণা হওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে—NRC-এর বাকি কাজ কি সম্পূর্ণ হলো? এই বিষয়ে কমিশনের তরফে স্পষ্ট কোনও জবাব মেলেনি।

রাজনৈতিক চাপ কি সত্যিই কাজ করল?

SIR শুরু হওয়ার পরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া সুরে প্রশ্ন তুলেছিলেন, “অসমকে কেন বাদ রাখা হবে?”

অন্যান্য বিরোধী দলও কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই চাপের মুখেই ২১ দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত বদল করতে বাধ্য হলো নির্বাচন কমিশন।

নাম আলাদা হলেও অসমে যে কার্যত SIR-ই চালু হচ্ছে, তা নিয়েই বিতর্ক বাড়ছে। NRC প্রক্রিয়া অসমাপ্ত থাকা সত্ত্বেও SR ঘোষণা—এটি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.