এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠে আসছে। বুধবার সকালে সেই বিষয় নিয়েই নির্বাচন কমিশনকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “রাজ্যে এসআইআর শুরুর পর ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মূল্যবান প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ নির্বাচন কমিশনের অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তের জন্য।”
অক্টোবরের শেষ দিকে নির্বাচন কমিশন রাজ্যে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) ঘোষণা করে। কমিশনের দাবি ছিল, যাঁদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে বা পরিবারের কারও নাম রয়েছে, তাঁদের কোনও আতঙ্কের কারণ নেই। তবু এসআইআর নিয়ে জেলায় জেলায় তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি, ভীতি ও অনিশ্চয়তা। বহু মানুষের মনে দেশছাড়া বা নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা দানা বেঁধেছে। অভিযোগ, এই আতঙ্ক থেকেই আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন অনেকে।
শুধু সাধারণ মানুষই নন, ভয়াবহ কাজের চাপে বিএলওদের মানসিক অবস্থাও বিপর্যস্ত—এমন অভিযোগও উঠছে। বুধবার ভোরে মালবাজারে এক মহিলা বিএলও-র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবার জানিয়েছে, এসআইআরের প্রচণ্ড চাপ সামলাতে না পারায় তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মুখ্যমন্ত্রী বুধবার ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি লেখেন, “আজ আরও একজন বিএলওকে হারালাম। অঙ্গনওয়াড়িতে কাজ করতেন ওই মহিলা। এসআইআর-এর এত চাপ তিনি নিতে পারেননি।” মমতার অভিযোগ, “অপরিকল্পিতভাবে একটি বিশাল কাজ শুরু করে কর্মীদের অমানবিক চাপে ফেলা হচ্ছে কমিশনের তরফে। যে কাজ করতে আগে তিন বছর সময় নেওয়া হতো, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবার তা দুই মাসে শেষ করতে বলা হয়েছে। ফলে একের পর এক মূল্যবান প্রাণ চলে যাচ্ছে।”
মুখ্যমন্ত্রী এদিন নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে সতর্ক হয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর বার্তা—মানুষের জীবন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা চলবে না, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।