দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে শীতের দাপট ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে এমন ঠান্ডা বহু বছরের রেকর্ডকে পিছনে ফেলেছে। আজ কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। উত্তুরে হাওয়ার প্রভাবে রাত থেকেই ঠান্ডার কামড় বাড়তে শুরু করেছে শহরজুড়ে।
বোলপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা—কলকাতার কাছেও কনকনে ঠান্ডা
আজকের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের সবচেয়ে শীতল অঞ্চল ছিল বোলপুর, যেখানে পারদ নেমেছে ১১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কলকাতার কাছাকাছি অঞ্চলগুলিও জব্বর ঠান্ডায় কাঁপছে। কল্যাণীতে ১২ ডিগ্রি, যা নভেম্বরের জন্য অত্যন্ত বিরল। ভোর থেকেই কুয়াশায় ঢাকা পড়ে ছিল গোটা অঞ্চল, রাস্তায় গাড়ির হেডলাইট জ্বেলে চলতে হয়েছে।
তেরোর নিচে তাপমাত্রা: দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে অস্বাভাবিক শীত
দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলাতেই আজ তাপমাত্রা নেমে গেছে তেরোর নিচে। আসানসোল ও বাঁকুড়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.২ ডিগ্রি, পানাগড়ে ১২.৩ ডিগ্রি। পশ্চিমাঞ্চলের জেলা পুরুলিয়াতে পারদ ছিল ১৩ ডিগ্রি, যা নভেম্বরের শেষে খুবই দুর্লভ। বাতাসে শুষ্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠান্ডার কামড় আরও তীব্র হয়েছে।
উপকূলে বিরল শীতের ছোঁয়া
এবার শীতের প্রভাব থেকে উপকূলও রেহাই পায়নি। সাধারণত উপকূলীয় দিঘা, ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবারে ঠান্ডা তুলনামূলক কম পড়ে। কিন্তু আজ দিঘায় তাপমাত্রা নেমেছে ১৪.৬ ডিগ্রিতে, ক্যানিংয়ে ১৪ ডিগ্রি, ডায়মন্ড হারবারে ১৪.৯ ডিগ্রি। আবহবিদদের মতে, নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে উপকূলে এমন নিম্ন তাপমাত্রা অত্যন্ত বিরল ঘটনা।
নভেম্বরে এমন শীত বহু বছর দেখা যায়নি
আবহাওয়া দফতরের পর্যবেক্ষণ, নভেম্বর মাসে দক্ষিণবঙ্গে এমন ঠান্ডা শেষ কবে পড়েছিল তা মনে করতে পারছেন না আবহবিদরাই। নিরবচ্ছিন্ন উত্তুরে হাওয়া এবং শুষ্ক বায়ুপ্রবাহই এই হঠাৎ পারদপতনের মূল কারণ। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্যও বেড়ে যাওয়ায় এই শীতের অনুভূতি আরও বেশি করে হচ্ছে মানুষের।
ডিসেম্বরে ‘জব্বর শীত’-এর ইঙ্গিত
যে ধারা এখন দেখা যাচ্ছে, তাতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই দক্ষিণবঙ্গে জব্বর শীত নেমে আসতে পারে। সকালের কুয়াশা, কনকনে বাতাস এবং রাতের পারদপতন—সব মিলিয়ে এবারের শীত আরও লম্বা ও তীব্র হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী কয়েক দিনের পূর্বাভাস
আপাতত আগামী ২–৩ দিন তাপমাত্রা এইভাবেই থাকবে। রাত ও ভোরের ঠান্ডা আরও অনুভূত হবে। এরপর মেঘের আনাগোনা বাড়লে পারদ কিছুটা চড়তে পারে, তবে সামগ্রিকভাবে দক্ষিণবঙ্গে শীতের দাপট বজায় থাকবে বলেই পূর্বাভাস।