রাজ্যে ‘এসআইআর আতঙ্কে’ মৃত্যুমালা লম্বা হওয়ায় মৃত এবং অসুস্থদের পরিবারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ‘এসআইআর আতঙ্কে’ ৩৯ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে আত্মহত্যাও রয়েছে। এই পরিস্থিতিকে “চরম দুঃখজনক এবং অমানবিক” বলে উল্লেখ করে তিনি মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
মমতা জানান, এসআইআর নিয়ে কাজের চাপ এবং মানসিক চাপে আরও অন্তত ১৩ জন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)। এঁদের প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এসআইআর (Special Intensive Revision) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ২৮ অক্টোবর থেকে। প্রথম দিনেই আত্মহত্যা করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের বাসিন্দা প্রদীপ কর। তারপর থেকে গণনাপত্র (Enumeration Form) পূরণ ও সংগ্রহের মধ্যে ক্রমাগত মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতে থাকে।
সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে—
- ৩৯ জনের মৃত্যুর মধ্যে প্রায় অর্ধেক আত্মহত্যা,
- বাকিরা মারা গিয়েছেন হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন স্ট্রোকে, যা পরিবারগুলির দাবি অনুযায়ী “অতিরিক্ত কাজের চাপ এবং ভয়” থেকেই হয়েছে।
এ ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যে ‘কাজের চাপ’-এর জেরে মৃত দু’জন বিএলও-র পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে সাহায্য করা হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে উদ্বেগ বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, এসআইআর সংক্রান্ত কাজ যেন মানবিকভাবে পরিচালিত হয় এবং কোনওভাবেই সাধারণ মানুষের উপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।
বিরোধীরাও এসআইআর নিয়ে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ক্রমাগত সরব। কেন্দ্রের কাছে এই প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবি উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার ঘোষণা এসআইআর বিতর্ককে আরও উত্তপ্ত করল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।