ডিসেম্বর থেকেই শুরু হতে চলেছে নিউ টাউনের দুর্গা অঙ্গন নির্মাণের কাজ। মঙ্গলবার নবান্নে রাজ্যের গত ১৪ বছরের উন্নয়ন—জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের খতিয়ান পেশ করার সময়ই এ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের আদলে তৈরি হতে চলা এই অঙ্গনের দায়িত্বে রয়েছে হিডকো। হিডকোর চেয়ারম্যান ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সময় মেনে ডিসেম্বরের কোনো একদিন ভিত্তিপুজো হবে, তারপরই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে নির্মাণকাজ।
ইতিমধ্যেই প্রাথমিক নির্মাণ-প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি এবং দরপত্রের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। নিউ টাউনের ইকো পার্কের কাছে, রামকৃষ্ণ মিশনের জমির সংলগ্ন জায়গাতেই দাঁড়িয়ে উঠবে এই মমতা-বান্ধব ‘দুর্গা অঙ্গন’। গত ২২ অগস্ট ২৬১.৯৮ কোটি টাকার আনুমানিক ব্যয়ে দরপত্র আহ্বান করে হিডকো। নির্দেশ অনুযায়ী, অঙ্গীকারের দিন থেকে দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক চললে ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ সম্পূর্ণ হবে দুর্গা অঙ্গন।
দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। শিলিগুড়িতে মহাকাল মন্দির নির্মাণের কাজও এগোচ্ছে। এবার কলকাতায় উঠছে দুর্গা অঙ্গন—যাকে অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন।
তবে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা অন্য সুরে। বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক টানার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে জগন্নাথ মন্দির থেকে দুর্গা অঙ্গনের উদ্যোগ—দুই-ই বিজেপির হিন্দুত্ব এজেন্ডাকে ভোঁতা করার মমতার কৌশল, এমনই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই দাবি করে এসেছেন—তিনি সর্বধর্ম সমন্বয়ের পথে বিশ্বাসী, এবং এই প্রকল্পগুলি সেই ভাবনারই বহিঃপ্রকাশ।
আগামী বছরের বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে এ ধরনের ঘোষণা রাজ্যের রাজনৈতিক তাপমাত্রা আরও বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।