প্রথম পাতা খবর ৩২ হাজার চাকরি বাতিল নয়: স্বপদে বহাল টেট শিক্ষকরা, তবে চলবে দুর্নীতির তদন্ত, জানাল হাই কোর্ট

৩২ হাজার চাকরি বাতিল নয়: স্বপদে বহাল টেট শিক্ষকরা, তবে চলবে দুর্নীতির তদন্ত, জানাল হাই কোর্ট

57 views
A+A-
Reset

হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের ঐতিহাসিক রায়ে বড় স্বস্তি পেলেন ২০১৪ সালের টেটের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকরা। ৩২ হাজার প্রাথমিক চাকরি বাতিল হচ্ছে না, প্রত্যেকেই স্বপদে বহাল থাকবেন—বুধবার স্পষ্ট জানিয়ে দিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের বেঞ্চ। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ যে নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল, তা এ দিন খারিজ হয়ে গেল। তবে নিয়োগে যে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, তার তদন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমেই অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আদালত। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “দীর্ঘ ন’ বছর পর চাকরি বাতিল করা হলে পরিবারগুলোর উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।” সেই কারণেই চাকরি বাঁচল হাজার হাজার শিক্ষকের।

এজলাস থেকে বেরিয়ে আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী জানান, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের ভুল বা দুর্নীতির দায় শিক্ষকদের উপর চাপানো হয়েছিল, যা সঠিক নয়। বহু বছর ধরে যারা নিষ্ঠার সঙ্গে চাকরি করেছেন, তারা প্রভাবশালী কেউ নন। তাই তাদের চাকরি বাতিল করা অন্যায় হতো। ডিভিশন বেঞ্চ সেই যুক্তিকেই মান্য করেছে।

২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে প্রায় ৪২,৫০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই নিয়োগ নিয়েই অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের মে মাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগের কথা বলেছিলেন। পর্ষদ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানায় ডিভিশন বেঞ্চে। আগের ডিভিশন বেঞ্চ চাকরি বাতিলের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিলেও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছিল। পরে রাজ্য ও পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে বিশেষ অনুমতির আবেদন করে। অভিযোগ ছিল, সমস্ত পক্ষের কথা শোনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি হাই কোর্টে ফেরত পাঠিয়ে সব পক্ষের বক্তব্য শুনে রায় দিতে নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মেনে বুধবার রায় ঘোষণা করল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের বেঞ্চ।

ফলে প্রায় এক দশক ধরে অনিশ্চয়তায় থাকা ৩২ হাজার শিক্ষক এ দিন আইনি স্বস্তি পেলেন। চাকরি বহাল থাকলেও নিয়োগে দুর্নীতির তদন্ত চলবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মাধ্যমেই—এই দ্বৈত সিদ্ধান্তে পরিষ্কার, আদালত স্বচ্ছতা যেমন চাইছে, তেমনই চায় নিরীহ কর্মরতদের জীবনে বিপর্যয় না আসুক।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.