দেশের বৃহত্তম বেসরকারি এয়ারলাইন ইন্ডিগোতে চলছে চরম বিশৃঙ্খলা। বৃহস্পতিবার একদিনে ৫০০-রও বেশি উড়ান বাতিল হওয়ায় বিভিন্ন বিমানবন্দরে ব্যাপক অরাজকতা দেখা দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে হাজার হাজার যাত্রী ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায়, অভিযোগ–প্রতিবাদে উত্তাল পরিস্থিতি। কেবল দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদ মিলিয়েই বাতিল হয়েছে অন্তত ১৯১টি উড়ান। কলকাতা বিমানবন্দর থেকেও দেরিতে ছেড়েছে ২৪টি ইন্ডিগো ফ্লাইট, যার মধ্যে দু’টি আন্তর্জাতিক উড়ানও রয়েছে।
ইন্ডিগোর পরিষেবার এই ধসের সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিমান ভাড়ায়। অন্য এয়ারলাইনগুলির টিকিটের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। সাধারণত কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু ইকোনমি ক্লাসে যাওয়া যায় ৭–৮ হাজার টাকায়। বৃহস্পতিবার সেই ভাড়া পৌঁছেছে ২১ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকায়। একইভাবে কলকাতা–দিল্লি রুটে ৬–৭ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে ২৫ হাজার থেকে ৮৪ হাজার টাকায়। আর কলকাতা–মুম্বই রুটে ৭–৮ হাজার টাকার ভাড়া একলাফে বেড়ে ২৫–৪৮ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। ভাড়া বৃদ্ধির এই অস্বাভাবিক ধাক্কায় যাত্রীদের ক্ষোভ চরমে।
অন্যদিকে, এই পরিষেবা বিপর্যয়ের মাঝেই অ্যাভিয়েশন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ (DGCA) বৃহস্পতিবার দুপুরে ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষকে তলব করেছে। সংস্থার নভেম্বর মাসের কর্মক্ষমতা হঠাৎ কমে যাওয়ায় এবং যাত্রী অভিযোগ বাড়ায় নজরদারি বাড়িয়েছে ডিজিসিএ। তবে ইন্ডিগোর দাবি, কোনও তদন্ত শুরু হয়নি, শুধুমাত্র কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে।
এদিকে, ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া পাইলটস (FIP) ইন্ডিগোর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, ইন্ডিগো দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ রেখেছে। ফলে সংস্থায় কর্মীর তুলনামূলক ঘাটতি তৈরি হয়েছে। পাইলটদের বেতনের একটি অংশ নাকি স্থগিত রয়েছে। সবমিলিয়ে মানবসম্পদের ঘাটতি থেকেই পরিষেবা বিপর্যয়ের জন্ম—এমনটাই দাবি ফেডারেশনের।
ইন্ডিগোর পরিষেবা কবে স্বাভাবিক হবে, রিফান্ড কীভাবে হবে, যাত্রীদের অতিরিক্ত খরচ কীভাবে সামলানো হবে—তা নিয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট তথ্য নেই। ফলে বিমানযাত্রায় অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।