গত ২৯ নভেম্বর কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে শুরু হওয়া সিপিএমের ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’ বুধবার শেষ হল বেলঘরিয়ার দেওয়ান পাড়া মাঠে। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে রাজ্যের নানা প্রান্তে জনসংযোগের এই পদযাত্রা শেষ হলেও, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম শূন্যের গেরো কাটাতে পারবে কি না— সে প্রশ্নে সংশয় কাটেনি দলের অন্দরেই।
বুধবার সন্ধ্যায় যাত্রার সমাপ্তি সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বৃন্দা কারাত, সুজন চক্রবর্তী, রাজ্য নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সমাবেশের মঞ্চ থেকে রাজ্য ও কেন্দ্র— দুই সরকারের বিরুদ্ধেই তীব্র আক্রমণ শানান নেতারা।
ভাষণে মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেন, ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর ধারাবাহিক হামলা হচ্ছে। এমনকি কলকাতার ব্রিগেডে প্যাটিস বিক্রেতাদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও তিনি তুলে ধরেন। পাশাপাশি আর জি কর কাণ্ড এবং শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সেলিম বলেন, “আগামী দিনের লড়াই আরও তীব্র করার জন্য, মানুষের কথা জানার জন্যই এই যাত্রা। যে বাংলাকে তিল তিল করে বামপন্থীরা গড়ে তুলেছিল, সেই রাজ্যকে বাঁচাতে হবে। আমাদের যাত্রা এখানে শেষ নয়। এখান থেকেই নতুন লড়াই শুরু। নতুনদের তেজ আর বয়স্কদের অভিজ্ঞতা নিয়ে ভাঙা বুকের পাঁজর দিয়েই নতুন বাংলা গড়তে হবে।”
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুজন চক্রবর্তী ও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও। তাঁরাও রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি, দুর্নীতি ও গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হওয়ার অভিযোগ তুলে সিপিএমের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের রূপরেখার ইঙ্গিত দেন।
যদিও দলীয় নেতৃত্বের দাবি, এই যাত্রার মাধ্যমে সংগঠনের ভিত মজবুত হয়েছে, তবু রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে— বিধানসভা ভোটের আগে এই পদযাত্রা সিপিএমকে কতটা নতুন করে চাঙ্গা করতে পারবে, তার উত্তর এখনও অনিশ্চিত।