পঙ্কজ চট্টোপাধ্য়ায়
“ফাতেহা দোয়াজ দাহাম”
“ফাতেহা” এই আরবী শব্দের মানে হোল মোনাজাত্ অর্থাৎ দোয়া- প্রার্থনা। এবং “দোয়াজ-দহাম্,” শব্দের মানে হোল ১২ এই শরৎ কালে যেমন আশ্বিন মাস-কার্ত্তিক মাস,ঠিক তেমনই এই সময়ে পড়ে আরবীর রবিউল আউয়াল মাসের বারো তারিখ,যেদিন বিশ্ব-নবী হজরত মহম্মদের শুভ আবির্ভাবের দিন। তাই এই দিনে সারা বিশ্বে মানুষের শুভ কামনায় প্রার্থনা বা দোয়া করা হয়। “রবিউল” শব্দের মানে হল সবুজের সমারোহ।ইতিহাস বলছে যে, হজরত মহম্মদ নবী সাহেব যে বছর মা আমিনার গর্ভে এসেছিলেন, সে বছর বিশ্বনবীর জন্মস্থান সেই মরু অঞ্চলে ফুল ফল আর ফসলের শুভাগমন হয়েছিল প্রচুর। প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল সেই মরুভুমির এলাকা।
ইতিহাসের সেই কথা মনে রেখে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মানুষরা ইসলামী রীতি অনুযায়ী অনাড়ম্বর ভাবে নামাজ,কোরান পাঠ,উপবাস করে এই দিনটিতে বিশ্বনবীর জন্য দোয়া প্রার্থণা করেন। আল্লার কাছে মানুষের শুভ বুদ্ধি,শুভ চিন্তা,বিশ্ব জুড়ে সকলের জন্য শান্তি,মৈত্রী, সম্প্রীতির প্রার্থণা করা হয় এই পবিত্র ফাতেহা দোহাজ দাহাম দিনটিতে।
সারা বিশ্বে বিরাজ করুক মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা,বিশ্বাস,সম্প্রীতি এই প্রার্থনাই হোক এই দিনে র দোয়া।
“শুভ বিজয়া”
সম্প্রীতি আর পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার আর এক শুভ দিনের নাম ” শুভ বিজয়া”।
শারদোৎসবের শেষে মা দুর্গার বিসর্জনের সাথে সাথেই বিজয়া দশমীর দিন থেকেই শুরু হয় শুভ বিজয়া। এই বাংলাতে এই শুভ বিজয়া চলে কালীপুজোর আগে অবধি। দৈনন্দিন সামাজিক,পারিবারিক জীবনে যা কিছু ভুল ভ্রান্তি,মতানৈক্য,দ্বিধা-দ্বন্দ সব কিছু ভুলে এই দিনটিতে মনের সব কালিমা ধুয়ে ফেলে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয় এই বাংলা এবং বাঙালি।
এই শুভ বিজয়ার দশমী তিথি সারা দেশে দশেরা উৎসব হিসাবে পালিত হয়। সমস্ত অশুভ শক্তির নাশ করা হয়।
বাংলার ঘরে ঘরে,শহরে গ্রামে,মফঃস্বলে (দেশে বিদেশে) শুভ বিজয়া সমারোহে পালিত হয়। সদ্য সমাপ্ত দেবী দুর্গাপূজার আনন্দের মধ্যে জন্ম নেয় এক বিষন্নতা। এক বেদনার ব্যাথা। তারপর, অপেক্ষার দিন গোনা শুরু হয় পরের বছরের শারদীয় উৎসবের আসন্ন দিনগুলির জন্যে।
বাঙালির জীবনে বারোমাসে তেরো পার্ব্ব্ন—এই কথাটি শুধুমাত্র কথার কথা নয়।বরং,বলা যায়, বাঙালীর সুখ-দুঃখে,হাসি-কান্নায়,ঘর-কন্নায়, অন্তরে অন্তরে আর ঘরে বাইরে-অন্দরে বসবাস করে পালা পার্ব্বন আর উৎসব।
শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছায় ভরে উঠুক বাংলা ও বাঙালির ঘর-দোর, মনে মনে অপেক্ষায় উচ্চারিত হোক “আবার আসিব ফিরে,ধানসিঁড়িটির তীরে, এই বাংলায়”।