প্রথম পাতা প্রবন্ধ বোধন… হে মহামানব একবার এসো ফিরে…

বোধন… হে মহামানব একবার এসো ফিরে…

250 views
A+A-
Reset

পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায়

আমাদের এই দুর্গাপূজার সাথে আমাদের আটপৌরে সাধারণ নিত্যনৈমিত্তিক গেরস্থালিতে এক পরম্পরাগত বন্ধন রয়েছে, যা আমাদের সাহিত্যে, গানে, সংস্কৃতিতে ওতোপ্রোতভাবে সংযুক্ত হয়ে আছে।

এইজন্যই ষষ্ঠীর বোধনকে উদ্দেশ্য করেই কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তাঁর “বোধন” কবিতায় লিখেছিলেন আজকের শিরোনামের লাইনগুলি…” হে মহামানব একবার এসো ফিরে এই গ্রাম নগরের ভিড়ে…”।

পৌরাণিক মতে,অহংকারী মদমত্ত, আত্মম্ভরীতায় পূর্ণ রাবন নামক অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে রামচন্দ্র অকালে মানে অসময়ে দেবী দুর্গার আবাহন করেছিলেন,নিজে দেবীর মূর্তি তৈরী করেছিলেন। আর এই সমস্ত ঘটনাবলী ধ্যানে অবগত হতে থাকলেন স্বয়ং ব্রহ্মা। তিনি ধ্যানেতে জানতে পারলেন যে একটি ৮/১০ বছরের বালিকা ঋষি কাত্যায়নের আশ্রমের উদ্যানে একটি বেলগাছের ডাল ধরে মহাদিগন্তের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ব্রহ্মা ধ্যানস্থ হয়ে জানতে পারলেন, সেই বালিকা কাত্যায়নের কন্যা, যিনি স্বয়ং দেবী মা দুর্গার প্রতিভু। তিনি তখন কাত্যায়ন মুণিকে তাঁর সেই কন্যা বালিকার মধ্যে দেবীর প্রতিভু মাহাত্ম্য উপলব্ধি করান।তখন সেই বালিকার নাম দিয়েছিলেন স্বয়ং ব্রহ্মা… কাত্যায়নী।

রামচন্দ্র স্বয়ং দেবীমা-কে আবাহন করেন, এবং বোধন করেন মানে জাগ্রত করে প্রতিষ্ঠা করেন আরাধনার জন্য। অশুভ শক্তি রাবনকে নাশ করার জন্য। অবশ্য এই মাহাত্ম্য উপলব্ধির বিষয়।

তবে আমাদের এই মহাষষ্ঠীর পূণ্য লগ্নে দেবীমায়ের বোধন আরাধনার মধ্য দিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়,…মৃন্ময়ী মূর্তিতে চিন্ময়ী রূপ প্রতিষ্ঠিত হয় সার্ব্বজনীন মঙ্গল কামনায়। শুরু হয় শারদোৎসবের দিনগুলির মাহাত্ম্য।

মা,আজ এই মহাষষ্ঠীর মহা বোধনের পবিত্র মুহূর্তে প্রার্থনা করি তুমি সকলের মঙ্গল কোর, রক্ষা কোর আমাদের, আমাদের আটপৌরে সংসারে তোমার আশীর্বাদ যেন শুধু এই চার দিন নয়,সারা বছর বর্ষিত হয় অকৃপণভাবে।

“হে মহামানব, একবার এসো ফিরে এই গ্রাম নগরের ভিড়ে….।”
আমরা রয়েছি তোমারই অপেক্ষায়। মা তোমাকে প্রণাম।

আরও পড়ুন: ষষ্ঠীতে উপচে পড়া ভিড় মণ্ডপে, উৎসবে মাতোয়ারা কলকাতা থেকে জেলা

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.