বিরোধীদের তুমুল আপত্তি ও বিক্ষোভের মধ্যেই লোকসভায় পেশ হল কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন বিল। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একসঙ্গে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিল লোকসভায় পেশ করেন— কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন (সংশোধনী) বিল ২০২৫, সংবিধান (১৩০তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস (সংশোধনী) বিল ২০২৫।
এই বিলগুলির অন্যতম মূল প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যের মন্ত্রী যদি গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে টানা ৩০ দিনের বেশি জেলে থাকেন, তাহলে তাঁকে মন্ত্রিত্ব বা মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ করা হবে। কেন্দ্রের দাবি, এর মাধ্যমে সাংবিধানিক পদে আসীনদের জন্য কোনও অযৌক্তিক রক্ষাকবচ থাকবে না।
তবে বিরোধী শিবিরের দাবি, এই বিল আসলে নির্বাচিত বিরোধী সরকারগুলিকে অচল করে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আনা হয়েছে। বিল পেশের সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস-সহ ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। তৃণমূল সাংসদরা বিলের কপি ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ একাধিক সাংসদ অমিত শাহের দিকে বিলের কপি ছুঁড়ে দেন। তুমুল হট্টগোলের জেরে শেষ পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করতে হয়।
বিল নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই বিল আসলে সুপার এমার্জেন্সি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে মোদি সরকার। গণতন্ত্রের উপর হিটলারি আঘাত হানা হচ্ছে এই বিলের মাধ্যমে। এটা গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টার শামিল।’’
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই প্রস্তাবিত আইন কার্যকর হলে বিরোধী রাজ্য সরকার এবং তাদের নেতৃত্বের উপর কেন্দ্রের চাপ বাড়বে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছে দুর্নীতি ও অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত মন্ত্রীদের পদ আঁকড়ে থাকার সুযোগ আর থাকবে না। ফলে, এই বিল নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল সংঘাত তৈরি হয়েছে।