“আজ রাজনীতি নয়, মায়ের কাছে সকলের ভালো চাই।” — কালীপুজোর সকালে বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ে পুজোর দর্শন শেষে এই কথাই শোনা গেল তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের মুখে। রাজনীতি সরিয়ে রেখে সম্পূর্ণ ভক্তির মেজাজে এদিন মাতলেন কেষ্ট।
প্রতি বছর কালীপুজোয় উপোসে থাকেন অনুব্রত মণ্ডল। পুজো শেষ হলে সেই উপোস ভঙ্গ হয়। এ বছরও সেই দীর্ঘদিনের নিয়ম অক্ষুণ্ণ রেখেছেন বীরভূমের তৃণমূল কোর কমিটির কনভেনার। দুপুরে নীল পাঞ্জাবি পরে বোলপুরের কার্যালয়ে হাজির হন তিনি।
এ বছর বোলপুরের এই ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো পড়ল ৪৬ বছরে। অতীতে পুরনো কার্যালয়ের একতলায় শুরু হয়েছিল এই পুজো। পরে নতুন ভবন তৈরি হলে দোতলায় স্থানান্তরিত হয় পূজার আয়োজন। প্রতিবছর সোনার গয়নায় সাজানো হয় প্রতিমা, আর এবার সেই জাঁকজমক আরও বেড়েছে — ৬০০ ভরি সোনার অলঙ্কারে সজ্জিত হয়েছেন মা কালী।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০২১ সালে ৫৭০ ভরি, ২০২০ সালে ৩৬০ ভরি, ২০১৯ সালে ২৬০ ভরি, আর ২০১৮ সালে ১৮০ ভরি সোনার গয়নায় সজ্জিত করা হয়েছিল প্রতিমাকে। এ বছর সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে আয়োজন।
এদিন অনুব্রত মণ্ডল নিজে কার্যালয়ে গিয়ে পুজোর প্রস্তুতি ও ভোগ-প্রসাদ রান্নার তদারকি করেন। পুজো শেষে সংবাদমাধ্যমকে বলেন,
“১২ বছর বয়স থেকে মায়ের ভক্ত আমি। পুজো করি, মায়ের কাছে সবার মঙ্গল চাই। বীরভূমের মানুষ যেন ভালো থাকে, সাধারণ মানুষ, সব শ্রেণি ও জাতির মানুষ যেন ভালো থাকে।”
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়— রাজনৈতিক মানুষ হিসেবে কালীপুজোর দিনও কি রাজনীতি মাথায় থাকে? অনুব্রতর স্পষ্ট জবাব,
“দুর্গাপুজো-কালীপুজোর সময় রাজনীতির কোনও পাঠ মনেই রাখি না।”
বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয়ের কালীপুজো এবারও যেন হয়ে উঠেছে রাজনীতি ছাপিয়ে ভক্তির প্রতীক— যেখানে ‘কেষ্ট’ নয়, দেখা গেল একনিষ্ঠ ভক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে।