বাংলাদেশের জেলে বন্দি বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুনদের দেশে ফেরানোর পথে বড় অগ্রগতি। ঢাকা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশনকে, সোনালিকে দ্রুত ভারতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে। বৃহস্পতিবার ওই নির্দেশের প্রতিলিপি প্রকাশ্যে আসতেই বীরভূমে স্বস্তির হাওয়া।
যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তবু তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামের হস্তক্ষেপেই এই মামলায় দ্রুত পদক্ষেপ হয়েছে।
গত জুনে, বীরভূমের পাইকর থানার বাসিন্দা সোনালি খাতুন, সুইটি বিবি-সহ ছয়জনকে অসম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করে বিএসএফ, অভিযোগ তাঁদের পরিবারদের। পরে তাঁদের আটক করে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পুলিশ এবং অনুপ্রবেশের অভিযোগে জেলে পাঠানো হয়।
পরিবারের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ভারতে ফেরাতে হবে। এরপরই তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলামের প্রতিনিধি মফিজুল শেখ বাংলাদেশে থেকে সোনালিদের সাহায্যের দায়িত্ব নেন।
সামিরুল ইসলাম এক্স (X)-এ লেখেন, “বাংলাদেশ হাই কোর্টের নির্দেশে এবার আশা দেখা দিয়েছে। তৃণমূল সরকার এবং রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদ যেভাবে বিষয়টি দেখছে, তাতে খুব শিগগিরই সোনালিদের দেশে ফেরানো সম্ভব হবে।”
বিজেপির উদ্দেশে তোপ দেগে বলেন, ”আমাদের দেশ যাদের বাংলাদেশি বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল তাঁরা যে এদেশেরই নাগরিক তা প্রমাণিত। ওদের শীঘ্রই ভারতে ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ হাই কোর্ট। বিজেপি যে বাংলা বিরোধী, ওরা যে দরিদ্রদের ভালোবাসে না। তাঁদের পাশে দাঁড়ায় ফের তা প্রমাণিত।ট
বাংলাদেশের আদালতে এখনও সোনালি ও সুইটি বিবি-সহ ছয়জনের জামিন মঞ্জুর হয়নি। পরবর্তী শুনানি ২৩ অক্টোবর নির্ধারিত হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ সূত্রে খবর, নথিপত্র সংক্রান্ত কিছু জটিলতা থাকলেও এখন মামলার প্রক্রিয়া ইতিবাচক পথে এগোচ্ছে।
বাংলাদেশ হাই কোর্টের এই নির্দেশে এখন আশার আলো দেখছেন সোনালিদের পরিবার। তাঁদের কথায়, “দিদির সরকার না থাকলে হয়তো আমাদের মেয়ে আজও কেউ খোঁজ নিত না। সামিরুল সাহেবের উদ্যোগে অন্তত এখন ভরসা পাচ্ছি।”
বাংলাদেশে ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় জামিন পেলেও তাঁদের দেশে ফেরানোর আইনি প্রক্রিয়া জটিল। তবে, তৃণমূল নেতৃত্বের সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং আদালতের নির্দেশে এখন সোনালিদের দেশে ফেরা সময়ের অপেক্ষা।