দুর্গাপুজোর মরসুমে ভারতে আসছে বাংলাদেশের ইলিশ। মঙ্গলবার সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, এবারে মোট ১,২০০ টন ইলিশ ভারতে রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ৩৭টি সংস্থাকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই রফতানির জন্য। কোন সংস্থা কত টন ইলিশ রফতানি করবে—৩০, ৪০ কিংবা সর্বোচ্চ ৫০ টন—তা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে নির্বাচিত সংস্থাগুলির জন্য কী কী শর্ত থাকছে, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
বস্তুত, পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশের চাহিদা বরাবরই বেশি। উৎসবের মরসুমে সেই চাহিদা আরও বাড়ে। সে কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। ভারতের ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন-এর সৈয়দ আনওয়ার মাকসুদ বলেন, “উৎসবের মরসুমে ইলিশ পাঠানোর জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করেছিলাম। অনুমতি দেওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ।”
প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ধরা হয়েছে ১২.৫ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ₹১,০৫৭)।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জাতীয় রফতানি নীতি (২০১৫-১৮) অনুযায়ী শর্তসাপেক্ষে রফতানি তালিকায় ইলিশ রয়েছে। ২০১৯ সালে প্রথমবার বিদেশে ইলিশ রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর থেকে দুর্গাপুজোর সময়ে ভারতে ইলিশ পাঠানো হয়ে আসছে। যদিও শেখ হাসিনার সরকার পরে ইলিশ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, পুজোর মরসুমে সেই ছাড় অব্যাহত ছিল।
গত বছর হাসিনার সরকারের পতনের পরে অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার প্রথমে রফতানি বন্ধ রাখার কথা জানায়। পরে সিদ্ধান্ত বদলে ২,৪২০ টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়। এবার সেই সংখ্যা আরও কমে দাঁড়াল ১,২০০ টনে।
বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, ইলিশ রফতানি একটি ক্ষুদ্র বিষয় মাত্র, এবং এ নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে ভারতীয় ক্রেতাদের কাছে এ খবর নিঃসন্দেহে বড় সুখবর, কারণ দুর্গাপুজোয় বাজারে পদ্মার ইলিশ পাওয়া নিশ্চিত হলো।