প্রথম পাতা খবর বারাসত মর্গে মৃতের চোখ উধাও, বিক্ষোভে আটকে গেল মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়, অভিযোগ শুনে দ্রুত চাকরি-ক্ষতিপূরণের আশ্বাস

বারাসত মর্গে মৃতের চোখ উধাও, বিক্ষোভে আটকে গেল মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়, অভিযোগ শুনে দ্রুত চাকরি-ক্ষতিপূরণের আশ্বাস

10 views
A+A-
Reset

বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে মৃতের একটি চোখ উধাও হওয়ার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। মৃতের দেহ নিতে এসে এ দৃশ্য দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, মর্গে অঙ্গ পাচার চক্র সক্রিয়। এই অভিযোগের জেরে দ্রুতই এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং ঠিক সেই সময় বনগাঁয় রাজনৈতিক কর্মসূচি শেষে কলকাতায় ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় ওই বিক্ষোভের মাঝেই আটকে যায়। পরিস্থিতি দেখে মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে নিজে মৃতের পরিবারের সদস্যদের ডেকে কথা বলেন এবং পুরো ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি চাকরি ও আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন।

মৃতের নাম প্রীতম ঘোষ, বয়স ৩৫। তিনি বারাসতের কাজীপাড়া নেতাজিনগরের বাসিন্দা। এলাকায় একটি দোকানে কাজ করার পাশাপাশি সময় পেলেই অনলাইন বুকিং করা বাইক চালাতেন। সোমবার ভোরে কাজীপাড়া রেলগেটের কাছে একটি ছোট মালবাহী গাড়ি তাঁর বাইকে ধাক্কা মারলে মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ মর্গে পাঠানো হয়। দুপুরে পরিবারের সদস্যরা দেহ নিতে গেলে দেখেন মৃতের চোখে তুলসী পাতা দেওয়া। সন্দেহ হওয়ায় তুলসী পাতা সরাতেই দেখা যায়—একটি চোখ নেই। তখনই তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। মৃতের এক আত্মীয়া বলেন, “আমরা দেখি একটি চোখ নেই। হাসপাতালে বলা হচ্ছে ইঁদুর খেয়েছে। যদি ইঁদুর হতো তাহলে কামড়ের দাগ থাকত। এটা অঙ্গ পাচার ছাড়া আর কিছু নয়।”

ঠিক এই সময়েই ঘটনাস্থলে আটকে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষুব্ধ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তিনি বলেন, “এটি মর্মান্তিক ঘটনা। তদন্তের নির্দেশ দিলাম। যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে এটি করে থাকে, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হবে। পরিবার বিচার পাবে।” তারপরই উপস্থিত পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দেন মৃতের পরিবারের ঠিকানা ও প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে। মৃতের মায়ের বায়োডাটা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কোটায় বছরে দু’টি চাকরি দেওয়া যায়। তার মধ্যে একটি চাকরি মৃতের মা পাবেন। প্রথম বছর মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতন পাবেন, পরে স্থায়ী করা হবে। দু’দিনের সময় নিচ্ছি—বুধবার বায়োডাটা নেওয়া হবে আর বৃহস্পতিবার বাড়িতে চাকরির নিয়োগপত্র পৌঁছে যাবে।” আশ্বাস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এরপর কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

বিক্ষোভ ও অভিযোগের পর হাসপাতাল প্রশাসনের ভূমিকা ও মর্গের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ঘটনাটি নজিরবিহীন, এবং অঙ্গ পাচার সংক্রান্ত অভিযোগের যথাযথ ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.