রাজ্যের রাজনীতিতে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও বর্তমান বিজেপি সাংসদ প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুললেন—“বিজেপি আদৌ কি তৃণমূলকে হারাতে চায়?”
একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি সরাসরি বলেন, “কেন্দ্রের অ্যাকশন দেখে আমার মনে হয়েছে, কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের এই পরিস্থিতির বদল করতে চায় না। কেন পশ্চিমবঙ্গের মতো প্রশাসনহীন রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারি করা হবে না, এটা আমার কাছে এক বিরাট প্রশ্ন।”
তাঁর এই মন্তব্যে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল। বিজেপির অন্দরেও অস্বস্তি বাড়ছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম, তা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতা থেকে সরানো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই উদ্দেশ্যের কাছাকাছিও পৌঁছতে পারিনি। এর দায় মূলত কেন্দ্রেরই। কেন্দ্রীয় সরকার এজন্য কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি কার্যত নরেন্দ্র মোদি সরকারকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ ফের সরব হন হিন্দি বলয়ের নেতাদের বাংলায় প্রচার নিয়ে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পরও তিনি এই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “হিন্দি বলয়ের নেতারা বাংলার মানুষের মন বোঝেন না। এখানকার জল, হাওয়া, মানুষ—সবই ভিন্ন। তাই দিল্লি বা উত্তরপ্রদেশের নেতা পাঠিয়ে বাংলায় ভোট করিয়ে জেতা সম্ভব নয়। এটা অবাস্তব চিন্তাভাবনা।”
অভিজিতের এই বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর মন্তব্য নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও নজর রাখছে। তবে এখনও পর্যন্ত দলীয়ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যেই প্রমাণ, বিজেপি শুধু বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করছে, আসলে পরিবর্তন চায় না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্যে একদিকে যেমন বিজেপির অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে, অন্যদিকে রাজ্যের শাসক-বিরোধী সমীকরণেও নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।