কয়েকদিন তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকার পর ফের রাজ্যে শীতের দাপট বাড়ল। বুধবার কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গজুড়ে অনুভূত হয়েছে তাপমাত্রার পতন। আবহাওয়াবিদদের মতে, মধ্য ভারতের উপর দিয়ে উত্তর-পশ্চিমি শীতল বাতাস ঢুকছে, যার প্রভাবেই তাপমাত্রা পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে মধ্যপ্রদেশে শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি চলছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, আগামী চার-পাঁচ দিন এভাবেই শীতের পরশ থাকবে। রাজ্যের সমতল এলাকায় বুধবার সবচেয়ে কম তাপমাত্রা নথিভুক্ত হয়েছে বীরভূমের শ্রীনিকেতনে—১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১৭.২ ডিগ্রিতে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩.১ ডিগ্রি কম। মঙ্গলবার এই তাপমাত্রা ছিল ১৮.২ ডিগ্রি।
উত্তরবঙ্গেও ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দার্জিলিংয়ের একটি পয়েন্টে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যদিও তা স্বাভাবিকের তুলনায় ১ ডিগ্রি বেশি।
দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চল—বিশেষত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে—উত্তুরে হাওয়ার প্রবেশ সবচেয়ে আগে হওয়ায় সেখানে ঠান্ডার প্রভাব বেশি। ওই অঞ্চলে তাপমাত্রা ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সর্বত্রই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে রয়েছে।
নভেম্বর মাসে সাধারণত শীত ধীরে ধীরে বাড়ে। তবে পুবালি হাওয়া সক্রিয় হলে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকে তাপমাত্রা সাময়িক বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ওঠানামাই শীতকালে স্বাভাবিক।
অতীত রেকর্ড বলছে, নভেম্বরেই কখনও কলকাতায় তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে এসেছে। এবার পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নির্ভর করছে বাতাসের গতিপ্রকৃতির উপর। বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে থাকছে, ফলে সকালে ও রাতে শীত অনুভূত হলেও দুপুরে তেমন ঠান্ডা নেই।
এদিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আপাতত নেই বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। রোদের দিনে বৃষ্টিহীন আবহাওয়া কৃষিকাজের পক্ষে অনুকূল। শীতের সবজি বা পাকাধান অসময়ে বৃষ্টি পেলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে; তার প্রভাব পড়ে বাজারদরে। ফলে বর্তমানে আবহাওয়ার স্থিতিশীলতা কৃষকদের জন্যও ইতিবাচক।
সব মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গজুড়ে হেমন্তের মনোরম হাওয়া উপভোগ করছেন সকলে।