নয়াদিল্লি: পুরুলিয়া অস্ত্রবর্ষণ মামলায় মূল অভিযুক্ত নিয়েলস্ হোল্ক ওরফে কিম ডেভির প্রত্যর্পণে সায় নেই ডেনমার্কের।
এর আগে ডেনমার্কের আদালতে হোল্ক স্বীকার করেছেন যে তিনি ছয়জনের সঙ্গে একটি রাশিয়ান কার্গো বিমানে চড়েছিলেন, ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমবঙ্গে অস্ত্র পাচার করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন শাসক দল সিপিএমের বিরুদ্ধে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সহযোগিতা করার জন্যই ওই অস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছিল বলে জানা যায়। এর পিছনে রাজ্য জুড়ে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টাও ছিল। তবে ইন্টারপোল ‘লুক আউট’ নোটিস জারি করলেও কিম ডেভির খোঁজ মেলেনি।
ঘটনার প্রায় ১২ বছর পর, ২০০৭ সালে আচমকাই কিম ডেভির খোঁজ মেলে। কিন্তু, তাঁকে প্রত্যপর্ণের প্রশ্নে রাজি হয়নি ডেনমার্ক। তার পর থেকে ভারত বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে প্রায় চার টন অস্ত্র সরবরাহ করার সন্দেহে বিচারের জন্য ওই মূল অভিযুক্তকে প্রত্যর্পণ করার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে।
এরই মধ্যে, একটি ডেনিশ আদালত বৃহস্পতিবার বলেছে, ওই অভিযুক্তকে ভারতে ফেরানোর বিষয়টিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি রয়েছে। যে কারণে প্রায় ২৯ বছর আগের অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় ওয়ান্টেড একজন ডেনিশ নাগরিকের প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
এতদিন পর বলা হচ্ছে, তাঁকে ভারতে পাঠানো হলে ডেনমার্কের প্রত্যর্পণ আইন লঙ্ঘিত হবে। কারণ এতে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি ঝুঁকি রয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি কোনো ধরনের চিকিৎসা সংক্রান্ত গাফিলতির শিকার হলে ইউরোপীয় কনভেনশন লঙ্ঘিত হবে। এ ব্যাপারে ডেনমার্কের প্রতিরক্ষা আইনজীবী জোনাস ক্রিস্টোফারসেন রয়টার্সকে বলেছেন, “ভারত যে গ্যারান্টি দিয়েছে তা বৈধ নয়।”
প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাতে, পুরুলিয়ার ঝালদা-মারামু-বেলামু এলাকা জুড়ে ছোট্ট একটি অ্যান্তোনভ-২৬ বিমান থেকে দফায় দফায় ঝরে পড়েছিল স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বোঝাই বস্তা। যে তালিকায় একে-৪৭ থেকে লাইট মেশিনগান, বাদ ছিল না কিছুই।