বিরোধী দলগুলির তরফে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের দাবি মানতে নারাজ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শনিবার কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এই ধরনের ভিডিও প্রকাশ করা ভোটারের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করতে পারে। কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, স্বচ্ছতার দাবিতে এই আবেদন উঠলেও তা আসলে আইনসম্মত নয় এবং ভোটার সুরক্ষার পরিপন্থী।
নির্বাচন কমিশন সতর্ক করে বলেছে যে, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ফুটেজ প্রকাশ করলে ভোটারদের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হতে পারে। ১৯৫০ ও ১৯৫১ সালের জনগণ প্রতিনিধি আইনের আওতায়, যা সুপ্রিম কোর্টও সমর্থন করেছে, ভোটার গোপনীয়তা রক্ষা করা বাধ্যতামূলক। কমিশন জানিয়েছে, ফুটেজ প্রকাশিত হলে কে ভোট দিয়েছেন বা দেননি, তা বোঝা সম্ভব হতে পারে। এতে ভোটাররা নির্দিষ্ট মহলের চাপে পড়তে পারেন বা বৈষম্য ও হেনস্থার শিকার হতে পারেন।
কর্মকর্তারা এমন কিছু সম্ভাব্য পরিস্থিতির উল্লেখ করেছেন—যেখানে কোনও রাজনৈতিক দল যদি কোনও বুথে কম ভোট পায়, তারা ফুটেজ খতিয়ে দেখে নিজেদের সমর্থক বা বিরোধীদের চিহ্নিত করতে পারে এবং পরে তাঁদের হেনস্থা করতে পারে। এই ধরনের নজরদারি তথ্যের অপব্যবহার গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থী, যার সুরক্ষা করা কমিশনের দায়িত্ব।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সিসিটিভি রেকর্ডিং ও ওয়েবকাস্ট কেবলমাত্র অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলি আইনত নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাধ্যতামূলক অংশ নয়। এই ডেটা ৪৫ দিন সংরক্ষণ করা হয়, কারণ এই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সংক্রান্ত মামলার আবেদন করা যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনও আবেদন না এলে ডেটা নষ্ট করা হয়, যাতে পরে কোনও অপব্যবহার না ঘটে।
কমিশন সমস্ত রাজ্য স্তরের নির্বাচন আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে, ৪৫ দিনের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রান্ত হলে, যদি কোনও মামলা না ওঠে, তাহলে সিসিটিভি ফুটেজ, ওয়েবকাস্ট ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ড নষ্ট করতে। আদালতের নির্দিষ্ট নির্দেশ ছাড়া এই ডেটা এরপর আর সংরক্ষিত থাকবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।