সাধনা দাস বসু: পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার জন্য রাজ্য সরকারের দেওয়া টাকা হাতানোর অভিযোগে আরো চার জনকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। এই নিয়ে এই ঘটনায় মোট আটজনকে গ্ৰফতার করা হলো। মঙ্গলবার রাতে মালদহের বৈষ্ণবনগর এলাকা থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ এই চারজনকে পাকড়াও করে। ধৃতরা হলো পিন্টু শেখ, রকি শেখ, জামাল শেখ ও শ্রবন সরকার। এর আগে মালদহ থেকে এক জন এবং উত্তর দিনাজপুর থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ট্যাব কান্ডে এর আগে ধৃত হাসেন শেখকে জেরা করেই এদের সন্ধান পায় পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে চার অভিযুক্তকে আটক করে বৈষ্ণবনগর থানায় নিয়ে যায় পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় তাদের। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের কাছ থেকে একাধিক জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ১৫টা পেনড্রাইভ, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভ, ডায়েরি ও ব্যাঙ্কের নথি। পুলিশ জানিয়েছে, আরও অনেকে এই ট্যাব কেলেঙ্কারি চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে তদন্তকারীরা।
রাজ্য সরকার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অধীনে ট্যাব কেনার জন্য একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের এককালীন ১০ হাজার টাকা দেয়। সেই টাকা সরাসরি ঢোকে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। অভিযোগ ওঠে ৩০০র বেশি পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ঢোকেনি। কোথাও কোথাও আবার অভিযোগ, এক জনের টাকা চলে গিয়েছে অন্য জনের অ্যাকাউন্টে। এ ছাড়া, ‘হ্যাক’ করে ট্যাবের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে হাতানোর অভিযোগও উঠেছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমান থেকে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানিয়েছেন, রকি শেখ মালদার ভগবানপুর কেবিএস হাইস্কুলের চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে একাধিক স্কুলের অ্যাকাউন্টের লগ ইন ক্রেডেনশিয়াল সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে, যা অর্থ তছরুপে সহায়তা করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। পুলিশ আরো জানিয়েছে, ধৃতদের অনেকেরই সাইবার ক্যাফে আছে। সেই সাইবার ক্যাফেতে বসেই প্রতারণা চক্র চালাতো তারা।
এর আগে মালদহের বৈষ্ণবনগর থেকে হাসেন শেখকে পাকড়াও করে পুলিশ। এ ছাড়াও উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে ধরা পড়েছিল রামগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আশারুল হোসেন। অপর দুই ধৃত সাদিক হোসেন ও মোবারক হোসেন চোপড়া থানার দাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা।