দুবাই এয়ার শো-তে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট উইং কমান্ডার নমনশ স্যায়াল। হিমাচল প্রদেশের কাংরা জেলার বাসিন্দা ৩৭ বছরের নমনশ শুক্রবার তেজস লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট ওড়াচ্ছিলেন। একটি বিশেষ আকাশে কৌশল প্রদর্শনের সময় হঠাৎই বিমানটি ভারসাম্য হারায় ও আকাশ থেকে নিচে ভেঙে পড়ে। আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তেজসে আগুন ধরে যায়।
বায়ুসেনা নমনশ স্যায়ালের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “দুবাই এয়ার শো-তে প্রদর্শনী চলাকালীন তেজস যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। উইং কম্যান্ডার নমনশ স্যায়াল শহিদ হয়েছেন। ভারতীয় বায়ুসেনা গভীর ভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবারের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি তেজস যুদ্ধবিমানের ব্যর্থতার হার অত্যন্ত কম। ২৪ বছরে এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয় বার তেজস ভেঙে পড়ল। প্রাথমিক অনুমান, প্রদর্শনের সময় বিমানটির গতি ও উচ্চতা পর্যাপ্ত ছিল না। পাশাপাশি যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
নমনশ স্যায়ালের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হিমাচল প্রদেশ। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু লিখেছেন, “দেশ এক জন বীর, কর্তব্যপরায়ণ ও নির্ভীক পাইলটকে হারাল।” প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়রায় ঠাকুর ঘটনাকে অত্যন্ত হৃদয়বিদারক বলে উল্লেখ করেছেন।
সুজনপুরের সৈনিক স্কুল থেকে শিক্ষা সম্পূর্ণ করে নমনশ ২০০৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর বায়ুসেনায় যোগ দেন। তাঁর স্ত্রীও বায়ুসেনার অফিসার—বর্তমানে একটি কোর্সের সূত্রে কলকাতায় রয়েছেন। বাড়িতে রয়েছে তাঁদের ছ’বছরের কন্যা। তামিলনাড়ুর সুলুর এয়ার ফোর্স স্টেশনে থাকেন নমনশের বাবা-মা। বাবা জগন্নাথ স্যায়্যাল ভারতীয় সেনার মেডিক্যাল কর্পসে কর্মরত ছিলেন, পরে শিক্ষা বিভাগে যোগ দেন এবং অবসরের আগে প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ভারতের বীর সন্তান নমনশ স্যায়ালের অকাল প্রয়াণে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।