প্রথম পাতা খবর পাঁচ বছর পর ফের শুরু কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা, চালু হচ্ছে সরাসরি উড়ানও

পাঁচ বছর পর ফের শুরু কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা, চালু হচ্ছে সরাসরি উড়ানও

198 views
A+A-
Reset

পাঁচ বছর পর আবার শুরু হচ্ছে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা। ভারত ও চিনের কূটনৈতিক বৈঠকে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ভারত-চিনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলও পুনরায় শুরু হতে চলেছে। সোমবার বেজিংয়ে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইর বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির ৭৫তম বর্ষে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের গ্রীষ্মে কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় চালু হবে। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত সমস্ত নিয়মাবলি নির্ধারণের জন্য দুই দেশ আলোচনা চালিয়ে যাবে। প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভারতীয় পর্যটক ও পূণ্যার্থীরা চিন অধিকৃত তিব্বতের কৈলাস ও মানস সরোবর পরিদর্শন করেন। তবে ২০২০ সালে কোভিড অতিমারীর কারণে এই যাত্রা বন্ধ হয়ে যায়। একই বছর গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সংঘর্ষের ঘটনায় ২০ জন ভারতীয় সেনার শহীদ হওয়া দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে, যার ফলে যাত্রা চালুর বিষয়টি দীর্ঘদিন আটকে ছিল।

কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রায় ভারতীয় পূণ্যার্থীরা প্রধানত সিকিমের নাথু লা ও উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাস হয়ে তিব্বতে প্রবেশ করেন। ২০২০ সালে উত্তরাখণ্ডের যাত্রাপথের দ্বিতীয় ধাপের রাস্তাকে সম্প্রসারণ ও সংস্কার করে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (BRO)। এখন তাওয়াঘাট থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত সরাসরি গাড়ি নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে কালাপানি এলাকায় ভারত-নেপাল সীমান্ত বিতর্ক এখনও রয়ে গেছে, যা ভবিষ্যতে এই যাত্রার পথে প্রভাব ফেলতে পারে।

২০২০ সালের গোড়ায় কোভিড অতিমারীর কারণে ভারত-চিন সরাসরি বিমান পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে ছিল কলকাতা থেকে কুনমিং এবং গুয়াংঝাও উড়ান। এবার সেই বিমান চলাচল পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কবে থেকে এই পরিষেবা চালু হবে, তা শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক।

সম্প্রতি ভারত ও চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়, বিশেষ করে টহলদারির সীমানা নির্ধারণ এবং সেনা পিছোনোর বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা কমেছে। কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা চালু করা এবং বিমান পরিষেবা পুনরায় শুরু করাও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা শুধুমাত্র ধর্মীয় ভ্রমণ নয়, এটি ভারত-চিন কূটনৈতিক সম্পর্কের অন্যতম প্রতীক। পাঁচ বছর পর এই যাত্রা পুনরায় চালু হওয়া দুই দেশের মধ্যে আস্থার বার্তা বহন করছে। একই সঙ্গে, সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় শুরু হওয়াও বাণিজ্য ও পর্যটনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.