প্রথম পাতা খবর পারিবারিক বিবাদে ‘মৃত’ ঘোষণা! বিএলও-র মুখোমুখি হতেই মিলল রক্ষা, হাতে পেলেন এসআইআর ফর্মও

পারিবারিক বিবাদে ‘মৃত’ ঘোষণা! বিএলও-র মুখোমুখি হতেই মিলল রক্ষা, হাতে পেলেন এসআইআর ফর্মও

43 views
A+A-
Reset

এসআইআর প্রক্রিয়ার মাঝেই কালীঘাটে ঘটল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। পারিবারিক বিবাদের জেরে ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ‘মৃত’ ঘোষণা হতে বসেছিলেন অমৃত ব্যানার্জি রোডের বাসিন্দা অশেষ মুখোপাধ্যায় (নাম পরিবর্তিত)। বাড়ি বাড়ি এনুমারেশন করতে গিয়ে বিএলও প্রথমে তাঁর আত্মীয়দের কাছ থেকে শুনেছিলেন— অশেষবাবু নাকি মারা গিয়েছেন। ফলে তাঁর নাম বাদ যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। সৌভাগ্যক্রমে বিএলওর সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হওয়ায় রক্ষা পেলেন অশেষবাবু।

ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে। বহু প্রজন্ম ধরে কালীঘাট অঞ্চলে থাকা মুখোপাধ্যায় পরিবার আগে একান্নবর্তী ছিল। পরে জমি-সম্পত্তি ভাগ হওয়ায় একই বাড়ির দুটি দরজা ব্যবহার করে দুই পরিবার বাস করতে থাকে— একদিকে অশেষবাবুর পরিবার, অন্যদিকে তাঁর জ্যাঠতুতো ভাইয়ের পরিবার।

এসআইআর ফর্ম দিতে বিএলও প্রথমে জ্যাঠতুতো ভাইয়ের পরিবারের দিকে যান। পরিবারের সদস্যদের ফর্ম বিলির পর তিনি অন্য সদস্যদের সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁকে জানানো হয়— অশেষ আর বেঁচে নেই। এই তথ্য মেনেই তিনি বাড়িটি থেকে বেরিয়ে আসেন। কিছুটা এগোতেই চোখে পড়ে বাড়ির অন্য দরজা। কৌতূহলবশত কাছে যেতেই বাইরে বেরিয়ে আসেন এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক। তাঁর নাম জিজ্ঞাসা করতে অশেষবাবুই নিজের পরিচয় দেন। তখনই বিএলও বুঝতে পারেন— তাঁকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে।

অশেষবাবু প্রথমে হতবাক হয়ে যান। পরে বিএলওকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ফর্ম সংগ্রহ করেন। অশেষবাবুর মন্তব্য, ‘‘পরিবারের ঝামেলা নিয়ে আর কী বা বলব! হাতের ফর্মটাই এখন রক্ষা। আমি দরজার সামনে না এলে হয়তো সত্যিই নাম বাদ পড়ে যেত।’’

স্থানীয় সূত্রের দাবি, দুই পক্ষের বিবাদ দীর্ঘদিনের, আর সেই মনোমালিন্যের জেরেই আত্মীয়রা অশেষকে ‘মৃত’ বলে দাবি করেছিলেন। এসআইআর-এর মতো সংবেদনশীল প্রক্রিয়ার মধ্যে এমন ঘটনায় এলাকাজুড়ে হাসাহাসিও শুরু হয়েছে।

ফোন করে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট বিএলও বলেন, ‘‘আমরাও হতবাক হয়েছিলাম। নাগরিকের ভোটাধিকারের প্রশ্ন, তাই যাচাই না করে কোনও তথ্য নেওয়া যায় না। পরে অশেষবাবুর কাছে ফর্ম দিয়েছি। উনি খুব সৌজন্যের সঙ্গে আমাদের আপ্যায়নও করেছেন।’’

এসআইআর নিয়ে রাজ্যজুড়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, তখন কালীঘাটের এই ঘটনা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পারিবারিক বিবাদও যে ভোটার তালিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিতে এমন প্রভাব ফেলতে পারে, তা দেখে অবাক স্থানীয়রাও।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.