জাল আধার কার্ড বা ভুয়ো পরিচয়পত্র নিয়ে শহরের হোটেলে কেউ লুকিয়ে রয়েছেন কি না—এ বার তা খতিয়ে দেখতেই কড়া ভূমিকায় কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের নির্দেশ, শহরের প্রত্যেক হোটেল, গেস্ট হাউসে চলবে ‘সারপ্রাইজ চেকিং’। বোর্ডারের পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে তাঁদের গতিবিধি—সবই এবার নজরে রাখবেন আধিকারিকরা।
শনিবার লালবাজারে অপরাধ দমন-সংক্রান্ত বৈঠকে প্রত্যেক থানার ওসিদের জানানো হয়, র্যানডম পদ্ধতিতে হঠাৎ চেকিং করতেই হবে। কোনও হোটেলের দুই বা চার জন বোর্ডারকে রিসেপশনে ডেকে পরিচয়পত্র পরীক্ষা করা হবে। প্রয়োজনে পুলিশ সরাসরি তাঁদের রুমের সামনে পৌঁছে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট-ভিসা (বিদেশিদের ক্ষেত্রে) যাচাই করবেন।
পরিচয়পত্রে থাকা ছবির সঙ্গে ব্যক্তির চেহারা মিলছে কি না, তিনি কোথা থেকে এসেছেন, কোথায় যাচ্ছেন, পেশা কী—এই সব তথ্য মিলিয়ে দেখা হবে হোটেলের রেজিস্ট্রারে লেখা বিবরণের সঙ্গে।
দিল্লির বিস্ফোরণ এবং একাধিক হোটেলে সাম্প্রতিক খুনের ঘটনার জেরে নিরাপত্তা বাড়াতে এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ বলেই জানিয়েছে লালবাজারের উচ্চপদস্থ সূত্র।
এদিন বৈঠকে আরও জানানো হয়, শহরের সব হোটেল ও গেস্ট হাউসকে প্রতিদিন বোর্ডারদের তালিকা সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠাতে হবে। বিদেশি পর্যটকদের ছবি-সহ বিস্তারিত পরিচয়পত্র পূরণ করে বিশেষ অ্যাপে আপলোড করাও বাধ্যতামূলক।
হোটেলের রিসেপশন, লবি, করিডর, পার্কিং এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো এবং তা কার্যকর অবস্থায় রাখা আবশ্যিক। রিসেপশনে বড় করে লেখা থাকবে থানা, লালবাজার, দমকল ও অ্যাম্বুল্যান্সের নম্বর।
হোটেল কর্মী নিয়োগের সময় তাঁদের পরিচয় যাচাই করে তবেই চাকরি দিতে বলা হয়েছে। সন্দেহজনক বোর্ডারের বিষয়ে কর্মীদের সতর্ক থাকতে এবং তৎক্ষণাৎ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও প্রতিটি হোটেলে স্মোক ডিটেক্টর, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতে হবে। নির্দেশিকা না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও স্পষ্ট করেছে লালবাজার।