বর্ধমান প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে ফের ডিভিসির বিরুদ্ধে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় জলবন্দি পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকে কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, “মাইথন, পাঞ্চেত জল ছাড়ছে। ডিভিসির জল জেলাগুলিকে ভাসিয়ে দিচ্ছে।”
এই পরিস্থিতিতে বানভাসিদের জন্য অভয়বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘোষণা করেন, ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের আদলে নতুন একটি পৃথক প্রকল্প আনবে রাজ্য। এই প্রকল্পের আওতায় বর্ষায় জলের স্রোতে বা বন্যায় ভেঙে যাওয়া ও ভেসে যাওয়া বাড়ি নতুন করে গড়ে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, ভেঙে যাওয়া বাড়িগুলির তালিকা মুখ্যসচিবের কাছে পাঠাতে হবে জেলা প্রশাসনকে। থানার আইসি বা এসপি এমন ঘটনার খবর পেলে প্রশাসনের কাছে জানাবেন বলেও নির্দেশ দেন তিনি।
পানীয় জল নিয়েও কেন্দ্রকে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, জল প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে গ্রামে ও শহরে রাজ্যের নিজস্ব উদ্যোগে পাইপলাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে—গ্রামে ৭৬ শতাংশ এবং শহরে ৭৮ শতাংশ পরিবারে।
প্রসঙ্গত, ১৫ জুন থেকে ডিভিসি জল ছাড়া শুরু করেছে। মঙ্গলবারও পাঞ্চেত থেকে ৪৩ হাজার কিউসেক এবং মাইথন থেকে ১২ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। অর্থাৎ, দুর্গাপুর ব্যারাজে ৫৫ হাজার কিউসেক হারে জল প্রবেশ করে সেখান থেকে ৬১ হাজার কিউসেক হারে তা ছাড়া হচ্ছে। যদিও সোমবারের তুলনায় এদিন জল ছাড়ার হার কিছুটা কমেছে।
দু’কূল ছাপিয়ে বইছে দামোদর ও অজয়। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় মাটির বাড়ি ধসে এক নাবালক সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য জেলাতেও একই চিত্র। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর এই নতুন প্রকল্প ঘোষণায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন আশার আলো দেখছেন।
এদিন মোট ১১০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি শিলান্যাস করেন প্রায় ৫১ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের।