প্রথম পাতা খবর সরকারি হাসপাতালে পর পর ঘটনা, প্রকাশ্য বৈঠকে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর, নিরাপত্তায় ৬ নির্দেশ

সরকারি হাসপাতালে পর পর ঘটনা, প্রকাশ্য বৈঠকে ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর, নিরাপত্তায় ৬ নির্দেশ

17 views
A+A-
Reset

রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে পর পর ঘটনার পর ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার নবান্নে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আমি নিজে স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বে, তা সত্ত্বেও কেন বারবার এই ধরনের ঘটনা ঘটছে?”

সম্প্রতি উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসককে নিগ্রহ এবং এসএসকেএম হাসপাতালে নাবালিকা রোগিণীর শ্লীলতাহানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “একাধিক ঘটনায় কি বিরোধীদের কোনও চক্রান্ত রয়েছে, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।”

কালীঘাটের বাড়ি থেকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের আহ্বানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মমতা স্পষ্ট বার্তা দেন — সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে অবিলম্বে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপার, জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং সমস্ত পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনারেরা। উপস্থিত ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এবং স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ আধিকারিকেরাও।

মুখ্যমন্ত্রী সিসিটিভি মনিটরিংয়ের ঘাটতি নিয়েও তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি নির্দেশ দেন, “কোন হাসপাতালে কত সিসিটিভি অকেজো এবং তা সারাতে কত খরচ হতে পারে, তা বিস্তারিত রিপোর্ট আকারে রাজ্য সরকারকে জানান।” সেই সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন— “যদি নজরদারি সঠিকভাবে চলত, তবে এসএসকেএমের মহিলা শৌচালয়ে পুরুষ কীভাবে ঢুকে পড়ল?”

এছাড়া হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ওপরও জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “প্রত্যেক নিরাপত্তাকর্মীর সচিত্র পরিচয়পত্র থাকতে হবে।”
তিনি সতর্ক করেন যে, এক হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মী যাতে অন্য হাসপাতালে নির্বিচারে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এসএসকেএম কাণ্ডের অভিযুক্ত ব্যক্তি অন্য একটি সরকারি হাসপাতালের অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। এই ঘটনায় নজরদারির ব্যর্থতাকে কেন্দ্র করেই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জেলা প্রশাসনগুলির উদ্দেশে ছয় দফা নির্দেশ জারি করেন—
পুলিশ যাচাই, হাজিরা খাতা রক্ষণাবেক্ষণ, কাজের রস্টার তৈরি, দৈনিক রিপোর্ট প্রেরণসহ আরও কয়েকটি ব্যবস্থা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেন তিনি।

প্রশাসনিক মহলের মতে, এই বৈঠকে পুলিশকর্তাদের উপস্থিতি স্পষ্ট করে দিয়েছে— পর পর হাসপাতাল-সংক্রান্ত ঘটনাগুলি শুধুমাত্র স্বাস্থ্য দফতরের নয়, বরং নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ও বটে।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.