সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে কিছু রাজনৈতিক দল—এমন অভিযোগ তুলে সংহতি দিবসে আরও একবার সামাজিক মাধ্যমে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার X হ্যান্ডেলে একতার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, বাংলার মাটি সর্বদা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক। এই মাটি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের, যেখানে বিভেদের কাছে মাথা নত করা হয় না বলেই মন্তব্য তাঁর।
মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ—বাংলায় সকলে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলি। আনন্দ আমরা ভাগ করে নিই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি—ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। যারা সাম্প্রদায়িকতার আগুন জ্বালিয়ে দেশকে ধ্বংসের খেলায় মেতেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে। সকলে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুন।” সংহতি দিবস উপলক্ষে তাঁর এই বার্তা স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের পোস্টার শেয়ার করে একতার ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর সংহতি দিবসের আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৃণমূল ছাত্রপরিষদ ও যুব তৃণমূলকে। মুখ্যমন্ত্রী, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু এবং প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শনিবার দুপুরে হবে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যেই কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা ও হাওড়া থেকে ছাত্র-যুবদের ব্যাপকভাবে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরবর্তী বছর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে নিয়মিতভাবে সংহতি দিবস পালন করা হয়। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ককে লক্ষ্য করে রাজনৈতিক তরঙ্গ তৈরি হতে পারে বলেই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে তৃণমূল। দলের দাবি, বিজেপি রাজ্যে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করছে, তাই সম্প্রীতির বার্তা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
সভা প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেন বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য-সহ দলীয় নেতারা। প্রশাসনের তরফেও নিরাপত্তা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের সবদিকেই নজর রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সংহতি দিবসের এই সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়েই এখন আগ্রহ রাজনৈতিক মহলের।