‘আমাদের দরজা খোলা’, তৃণমূল প্রসঙ্গে বড় ইঙ্গিত পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের!

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির নতুন সভাপতি শুভঙ্কর সরকার জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেস-সহ সম-মনোভাবাপন্ন দলগুলোর জন্য কংগ্রেসের দরজা খোলা রাখবেন। ইন্ডিয়া টুডে টিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই ইঙ্গিত দেন, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর বার্তাও স্পষ্ট হয়েছে।

শুভঙ্কর সরকার, যিনি বর্ষীয়ান নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন, রাজ্য এবং জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক জোটের সম্পর্কে তার মতামত ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যখন বামফ্রন্ট বাংলায় ক্ষমতায় ছিল, তখনও কেন্দ্রে তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, কিন্তু রাজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতাম।”

অধীররঞ্জন চৌধুরীর নেতৃত্বে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে ব্যর্থ জোটের জন্য অধীর চৌধুরীকে দায়ী করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে শুভঙ্কর সরকার অধীর চৌধুরীর কাজের প্রশংসা করে বলেন, “অধীর চৌধুরীজির যা করণীয় ছিল, তিনি সেটাই করেছেন। তিনি বাংলায় দলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছিলেন এবং আমাদের কর্মীদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।”

তবে তিনি উল্লেখ করেন, রাজ্য এবং জাতীয় স্তরের জোটগত সমীকরণ ভিন্ন। বিজেপি ও আরএসএস-এর মতাদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এক ছাতার নিচে এসে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠন করেছে। শুভঙ্কর সরকার বলেন, “ইন্ডিয়া জোটের মতাদর্শ ভিন্ন। রাজ্যভিত্তিক সমীকরণ আলাদা। (লোকসভা নির্বাচনের আগে) আমরা সিপিএমের সঙ্গে জোট করেছিলাম এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা বাংলার ৪২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিল।”

তিনি আরও বলেন, “কংগ্রেস সবসময় তার দরজা খোলা রেখেছে। এটা জাতির কল্যাণের জন্য।”

পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে তার প্রধান লক্ষ্য দলের ভিত্তি আরও মজবুত করা বলেও উল্লেখ করেন শুভঙ্কর সরকার।

অন্যদিকে, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, যিনি টানা পাঁচবারের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজস্ব এলাকা বহরমপুরে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হন, তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। নতুন সভাপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া তখন থেকেই চলছিল।

শুভঙ্কর সরকারের নিয়োগ প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, “আমি কিছু বলতে চাই না। যে কেউ সভাপতি হতে পারেন। রাজ্য দলের সভাপতি নির্বাচন করার অধিকার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের।”

Related posts

‘যাঁরা বলতেন বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, আজ তাঁরাই উদ্বোধন করছেন’— অমিত শাহকে তীব্র কটাক্ষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ, মঞ্চ থেকেই বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের ডাক

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শর্তসাপেক্ষে জামিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের, সব মামলাতেই মুক্তি—জেলমুক্তি কবে?