প্রথম পাতা খবর বন্যার পর ভাগ্য ফেরাল তোর্সা! নদীর বুকে কাঠ তুলে জীবিকা খুঁজছেন আলিপুরদুয়ারের মানুষ

বন্যার পর ভাগ্য ফেরাল তোর্সা! নদীর বুকে কাঠ তুলে জীবিকা খুঁজছেন আলিপুরদুয়ারের মানুষ

25 views
A+A-
Reset

এক রাতের প্রবল বৃষ্টিতে তছনছ হয়ে গিয়েছিল উত্তরবঙ্গ। নদী উপচে পড়েছিল, ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছিল, প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। ভয়াবহ সেই প্রাকৃতিক বিপর্যয় এখনও চোখে ভাসছে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারবাসীর। কিন্তু এই বিপর্যয়ের মধ্যেই নতুন এক রোজগারের পথ খুলে গিয়েছে অনেকের সামনে।

আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের শিলতোর্সা নদীর দুই পারের মানুষ এখন কাঠ সংগ্রহকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। নদীতে ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি, ডালপালা, শুকনো কাঠ— এখন তাঁদের রোজকার উপার্জনের মাধ্যম।

প্রবল বৃষ্টিতে ফুলে উঠেছিল শিলতোর্সা নদী। ভুটান থেকে নেমে আসা জলের তোড়ে নদীর গতিপথে ভেসে এসেছিল গাছের অসংখ্য গুড়ি। একসময় এই নদীতেই ভেসে যেতে দেখা গিয়েছিল গণ্ডারকেও। ভয়ঙ্কর জলরাশি থেমে যাওয়ার পরই দেখা যায়, নদীর বুক ভর্তি কাঠের স্তূপ।

প্রথমে কেউ নামতে সাহস পাননি নদীতে। কিন্তু জলের স্রোত কমতেই অনেকেই সেই কাঠ সংগ্রহে নামেন। এখন সেটিই তাঁদের “নতুন পেশা”

শিলতোর্সা নদীর পাড়ের এক বাসিন্দার, “তিনদিন ধরে কাঠ সংগ্রহ করছি। বন্যায় সব শেষ হয়ে গিয়েছে। যা রোজগার হচ্ছে, তাতেই এক মাস চলবে।”

অন্য এক গ্রামবাসী বলেন, “চাষ সব নষ্ট। গ্রামের সবাই এখন নদীতে ভেসে আসা কাঠ তুলেই সংসার চালাচ্ছে। খুব লাভ না হলেও কিছুটা আয় হচ্ছে।”

 ভুটানের ফুন্টশলিংয়ে ন্যাশনাল রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (NRDCL)-এর ডিপোতে রাখা ছিল লক্ষ লক্ষ সেফটি পাইন গাছের গুড়ি। বন্যার জলে সেই কাঠগুলো ভেসে এসেছে তোর্সা নদী দিয়ে ভারতের সীমান্তে।

এখন সেই কাঠ আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের নদীপথ থেকে তুলে বিক্রি করে অনেকেই মোটা অঙ্কের রোজগার করছেন। কারও জন্য এই কাঠ দুর্যোগের নিদর্শন, কারও কাছে সেটাই জীবিকা টিকিয়ে রাখার শেষ আশ্রয়।

আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের শিলতোর্সা নদী দুই পাড়ে এখন কাঠ সংগ্রহ কেন্দ্র। স্থানীয় বাজারে বেড়েছে কাঠের চাহিদা। ভুটান থেকে ভেসে আসা কাঠ বিক্রি করে দৈনিক ₹৫০০–₹৮০০ রোজগার করছেন অনেকে। বন্যায় ভিটেমাটি হারানো মানুষদের জন্য এটি এখন একমাত্র আয়ভরসা।

আরও খবর

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.