ইয়েমেনে কেরলের নার্স নিমিশা প্রিয়ার আসন্ন মৃত্যুদণ্ডের প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিল, তাঁর ফাঁসি রুখতে ভারতের ভূমিকা খুবই সীমিত। সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামণী জানান, “সরকারের পক্ষে বিশেষ কিছু করা সম্ভব নয়। আমরা যেখানে পর্যন্ত যেতে পারি, সেখানে পৌঁছে গিয়েছি।” ইয়েমেনে ভারতের কোনও কূটনৈতিক প্রতিনিধিও নেই।
ভেঙ্কটরামণী জানান, ইয়েমেন রাষ্ট্রপুঞ্জ বা ভারতের স্বীকৃত নয়, ফলে সরকারি পর্যায়ে কূটনৈতিক আলোচনার সুযোগ সীমিত। তিনি বলেন, ‘ব্লাড মানি’— অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড রদে ক্ষতিপূরণ— একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়, যাতে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
কেরলের পালাক্কাড়ের বাসিন্দা নিমিশা ২০০৮ সালে ইয়েমেনে নার্স হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যৌথভাবে নার্সিংহোম খোলেন। সেই ব্যক্তি তালাল আব্দো মেহদিকে হত্যা করে দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করার অভিযোগে নিমিশা ও তাঁর এক সহকর্মীকে দোষী সাব্যস্ত করে ইয়েমেনের আদালত। অভিযোগ, তালাল নিয়মিত তাঁকে নির্যাতন করতেন ও পাসপোর্ট আটকে রাখেন। আত্মরক্ষায় ওষুধ খাইয়ে দেন নিমিশা, যা ওভারডোজ হয়ে মৃত্যুর কারণ হয় বলে তাঁর দাবি।
ইয়েমেনের আদালত নিমিশার আবেদন খারিজ করেছে। ১৬ জুলাই তাঁর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা। নিহতের পরিবার ‘ব্লাড মানি’ নিতে রাজি নয়। ফলে আইনি পথে বাঁচার রাস্তা কার্যত বন্ধ।
কেরল মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছেন, অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে নিমিশার প্রাণ রক্ষা করা হোক। একই দাবি তুলেছেন কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল।
সরকার বলছে, তাদের ক্ষমতার সীমা আছে। এখন শেষ ভরসা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মন বদলানো অথবা কোনও বেসরকারি মধ্যস্থতায় ‘ব্লাড মানি’ গ্রহণে তাঁদের রাজি করানো। নিমিশার প্রাণ বাঁচবে কি না, তা নির্ভর করছে মূলত ইয়েমেনি আইনের গতিপথ ও নিহতের পরিবারের সিদ্ধান্তের উপর।