১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেল হেফাজতে অস্বাভাবিক ভাবে মারা যান বুধন শবর নামে এক যুবক। সেই ঘটনায় কারাদণ্ড হল পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার তৎকালীন ওসি অশোক রায়ের। সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক দ্বিতীয়) জাহাঙ্গির কবীর। আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ খেড়িয়া শবর কল্যাণ সমিতি।
বুধনের মৃত্যুর ঘটনায় সেই সময় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। জেলবন্দি থাকাকালীন বুধনের মৃত্যুর ঘটনায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ তুলে সরব হন সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী। বুধনের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছিল। অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারে জেলে বন্দি থাকাকালীন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
দীর্ঘ ২৫ বছর পর, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া এবং ৩৩০ ধারায় হেফাজতে থাকাকালীন অত্যাচারের অভিযোগে অশোক রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে প্রাক্তন ওসি-কে আট বছর কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারক। এর পাশাপাশি পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অনাদায়ে অতিরিক্ত ছ’মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুটি সাজাই একসাথে চলবে বলে জানিয়েছে আদালত।
ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯৮ সালে। পুরুলিয়া-১ ব্লকের অকড়বাইদ গ্রামের বাসিন্দা পেশায় হস্তশিল্পী বুধন শহর ও তাঁর স্ত্রী শ্যামলী শবর ভাগ্নীর বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে ভাঙ্গীরডিহি গ্রামে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে বিকেল চারটে নাগাদ বরাবাজার থানার বামুনডিহা গ্রামের কাছে বুধনের জামার কলার ধরে টেনে মোটরসাইকেলে বসিয়ে নিয়ে চলে যান এক ব্যক্তি। জানা যায়, ওই ব্যক্তি বরাবাজার থানার পুলিশ। ১৯৯৭ সালে দুর্গাপুজোর সময় পুরুলিয়া-বান্দোয়ানগামী একটি বাসে ডাকাতির ঘটনায় বুধন জড়িত ছিল বলে জানা যায় পুলিশ সূত্রে। তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেখানে রহস্যজনক ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।