পানাগড় গাড়ি দুর্ঘটনার তদন্তে নতুন মোড়। অবশেষে পুলিশের দাবির সঙ্গে সহমত হলেন মৃতা সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের গাড়িচালক রাজদেও শর্মা। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, সুতন্দ্রাই তাঁকে সাদা গাড়ির পিছু ধাওয়া করতে বলেছিলেন। সেই সময় তাঁদের গাড়ির গতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারে পৌঁছে গিয়েছিল। দ্রুতগতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়ি।
গত রবিবার রাতে পানাগড়ে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চন্দননগরের বাসিন্দা এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার সুতন্দ্রা (২৭)। প্রথমে অভিযোগ ওঠে, কয়েকজন মত্ত যুবক একটি সাদা গাড়ি থেকে সুতন্দ্রাদের নীল গাড়িটিকে ধাক্কা দিচ্ছিল, যার ফলে গাড়িটি উল্টে যায়। এই দাবিই করেছিলেন সুতন্দ্রার সহকর্মীরা এবং গাড়িচালক।
তবে, পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এনে পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার কারণ আসলে ছিল রেষারেষি। সাদা গাড়ি নয়, বরং সুতন্দ্রার গাড়িই ওই রাতে যুবকদের গাড়ির পিছু ধাওয়া করছিল। ফুটেজেও দেখা যায়, সুতন্দ্রাদের গাড়ি দ্রুত গতিতে সাদা গাড়িটির পিছনে ছুটছে।
এবার সেই দাবিকেই মেনে নিয়ে রাজদেও জানান, ‘‘ওই সাদা গাড়িটি আমাদের গাড়িতে প্রথমে ধাক্কা দেয়। তখন ম্যাডামই বলেছিলেন, গাড়িটিকে তাড়া করতে এবং দাঁড় করাতে। আমি সেই চেষ্টাই করছিলাম। জাতীয় সড়ক ছেড়ে যখন তারা লোকাল রোডে নেমে যায়, ম্যাডামের কথাতেই আমি সেই পথ ধরি। গতি তখন ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার ছিল। আমি সামলে নিতাম, কিন্তু একটি টয়লেটের গায়ে ধাক্কা লেগে গাড়ি উল্টে যায়।’’
প্রসঙ্গত, সুতন্দ্রার সহকর্মীরা দাবি করেছিলেন, সাদা গাড়ি থেকে তাঁদের ‘ম্যাডাম’-কে অশ্লীল ইঙ্গিত করা হয়েছিল। তবে পুলিশ সেই দাবি নস্যাৎ করেছিল। রাজদেও নিজেও জানিয়েছেন, তাঁর চোখে ‘ইভটিজিং’-এর কোনও ঘটনা পড়েনি। তবে তিনি দেখেছেন, সাদা গাড়ির চালক তাঁদের দিকে তাকিয়ে ছিলেন।
ইতিমধ্যেই সুতন্দ্রার দুই সহকর্মীর গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করেছে আদালত। গ্রেফতার করা হয়েছে সাদা গাড়ির চালক বাবলু যাদবকে। নতুন তথ্য সামনে আসায় তদন্ত নতুন দিক নিচ্ছে বলে মনে করছে পুলিশ।