ডেস্ক: পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ভারতীয়দের উপর নজরদারি করা হয়েছে কিনা, তা জানতে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। কমিটির মাথায় থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রণ। এছাড়া থাকবেন অলোক যোশী এবং সাইবার সিকিওরিটি ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ। আট সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ।
বাদল অধিবেশনের শুরুর আগেরদিনই সামনে আসে পেগাসাস তত্ত্ব। দাবি করা হয়, পেগাসাস নামক একটি ইজরায়েলি স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংবাদিক, শিল্পপতিদের উপর। বিরোধীরা এই বিষয়ে তদন্তের দাবিতে সোচ্চার হয়। এরপরই পেগাসাস নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রের তরফে এই বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও সুপ্রিম কোর্ট দেশের নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তার কথা মাথায় রেখেই গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
আদালত সূত্রে খবর, এদিন পর্যবেক্ষণ পেশ করার সময় প্রায় প্রতিটি ছত্রে ছত্রে কেন্দ্রের সমালোচনা করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, সাংবিধানিক রক্ষাকবজের কথা বলে কখনই ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা যায় না। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও খর্ব করা যায় না। তেমনটা হলে, তা গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে খারাপ নজির তৈরি করবে। আদালত আরও জানায়, পেগাসাস কাণ্ডে কেন্দ্রকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার যে অজুহাত কেন্দ্র দিচ্ছে, তা শীর্ষ আদালত সমর্থন করে না।
আরও পড়ুন: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ১৩,৪৫১, বাড়ল মৃতের সংখ্যাও
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, “মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের এই রায়। গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। এটাই সকলে চাইছিল। এতে বের হয়ে যাবে কে পেগাসাসকে দিয়ে হ্যাকিং করিয়েছিল।”
কমিটিকে ৮ সপ্তাহ পর রিপোর্ট দিতে বলেছেন আদালত। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা কর্তৃক ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে, নিম্নলিখিত বাধ্যতামূলক পরিস্থিতিতে এই আদেশটি পাস করার জন্য আদালত গঠন করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা তথ্যের যুগে বাস করছি এবং আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ হলেও গোপনীয়তার অধিকার রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র সাংবাদিকদের জন্য নয়, সমস্ত নাগরিকের জন্যই তা প্রযোজ্য।