শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগে বিরোধীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র আক্রমণে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তাল। সোমবার অধিবেশন শুরুর প্রথামাফিক ভাষণে মোদি বলেন, “সংসদ নাটকের জায়গা নয়। যারা নাটক করতে চায়, করতেই পারে, কিন্তু এখানে স্লোগানের নয়—নীতির গুরুত্ব দিতে হবে।” তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল, কংগ্রেস—সহ অন্যান্য বিরোধী দল।
রাজ্যজুড়ে বিতর্কিত এসআইআর প্রক্রিয়া, তার জেরে বিএলওদের মৃত্যুর ঘটনা, এবং দিল্লি বিস্ফোরণ—এই সমস্ত ইস্যুতে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন উত্তাল হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই সেই উত্তেজনার আভাস মিলল প্রধানমন্ত্রীই মন্তব্যে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা
মোদির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এসআইআর ৪০ জনের প্রাণ কেড়েছে। সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুললেই সেটা নাটক? কমিশন এত তাড়াহুড়ো করছে কেন? কেন্দ্রের জবাবদিহি কোথায়? মানুষের মৃত্যুকে নাটক বলে দাগিয়ে দিচ্ছে বিজেপি।”
মহেশতলায় সেবাশ্রয় শিবির উদ্বোধনে গিয়ে তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ন্যায্য জবাব না মেলে, আমরা কোর্টে যাব। সবাই দেখছে কারা নাটক করছে আসলে।”
কংগ্রেসেরও জোরালো পালটা
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে কংগ্রেস নেতৃত্বও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এক্স-এ লেখেন—“গত ১১ বছরে সরকার অন্তত ১২টি বিল আলোচনা ছাড়াই পাশ করেছে। সংসদীয় রীতি-নীতির সর্বাধিক লঙ্ঘন করেছে এ সরকারই।”
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও সরাসরি মোদিকে আক্রমণ করে বলেন— “দূষণ, এসআইআর বা মানুষের জীবন-মৃত্যুর বিষয় তুলে ধরা নাটক নয়। বরং জনপ্রতিনিধিদের মুখ বন্ধ করাই আসল নাটক।”
উত্তপ্ত শীতকালীন অধিবেশনের ইঙ্গিত
রাজনৈতিক মহলের মতে, এসআইআর বিতর্ক, বিএলওদের আত্মহত্যা, প্রশাসনিক ত্রুটি, এবং দিল্লির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ—এইসব কারণে অধিবেশনে বিরোধীদের আক্রমণ তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মোদির কঠোর মন্তব্য সেই সংঘাতের আগুন আরও বাড়িয়ে দিল বলেই মত বিশ্লেষকদের।
শীতকালীন অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই কেন্দ্র–বিরোধী সংঘাতের এই ঝাঁঝ—পরবর্তী কয়েক দিনে সংসদকে আরও উত্তাল করে তুলবে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা।