নিজস্ব সংবাদদাতা: শতবর্ষে পা দিলেন আচার্য গিরীন্দ্রশেখর বসু। ১৮৮৭ সালের ৩০ জানুয়ারি বিহারে দ্বারভাঙায় জন্ম হয় তাঁর। তিনি ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার মনোবিজ্ঞানী ও ভারতীয় সাইকোঅ্যানালিটিক সোসাইটির প্রথম সভাপতি । তাঁর অন্য একটি পরিচয়ও রয়েছে তাঁর। সাহিত্যিক রাজশেখর বসুর কনিষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন তিনি। দেশে মনোবিদ্যার চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ। কিন্তু আজ তিনি বিস্মৃতির অতলে। দেশের এহেন গুণী মানুষটিকে মরনোত্তর ভারতরত্ন প্রদানের দাবি তুলল তাঁর অনুগামী ও গুণমুদ্ধরা।
যে সময় মনোবিজ্ঞান বলে চিকিৎসাশাস্ত্রে কোনও বিষয় রয়েছে তেমনটি কেউ কল্পনা করতে পারত না, সেই সময় দেশে এই বিষয় নিয়ে চর্চার করেছেন গিরীন্দ্রশেখর বসু। তিনি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার ১৪ নম্বর পার্শীবাগান লেনে নিজের বাড়িতে ভারতীয় মনঃসমীক্ষা সমিতি স্থাপন করেন। পরে সিগমুন্ড ফ্রয়েড ও আর্নেস্ট জোনস-এর সহযোগিতায় সমিতির এটি আন্তর্জাতিক সংস্থা- ‘ইন্টারন্যাশনাল সাইকোঅ্যানালিটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর অনুমোদন লাভ করে।
শুধু চিকিৎসাশাস্ত্র চর্চা নয় পাশাপাশি পরাধীন ভারতে দেশ সেবার কাজও নিয়মিত চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। ১৯০৬ সালের ৭ আগস্ট তিনি, তাঁর পরিবার ও অনুশীলন সমিতির সদস্যরা মিলে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
গিরীন্দ্রশেখর মনোবিজ্ঞানের উপর একাধিক বইও লিখেছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্বপ্ন, কনসেপ্ট অফ রিপ্রেশন, মনোবিদ্যার পরিভাষা ইত্যাদি। এর সঙ্গে তিনি ছোটদের জন্যও বই লিখেছেন। ভারতীয় দর্শনে তাঁর প্রবল আসক্তি ছিল। ভারতীয় দর্শন তাঁর বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারাকে যে কী পরিমাণে প্রভাবিত করেছিল তা তাঁর রচিত বিভিন্ন গ্রন্থে পাওয়া যায়। তাঁর মনোবিজ্ঞান চর্চার সঙ্গে ফ্রয়েডের অনেক মিল ছিল। জানা যায় ফ্রেয়েডের সঙ্গে নিয়মিত চিঠি চালাচালীও হতো তাঁর।