ঋষিকেশে গঙ্গার জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় এবং টানা বৃষ্টির কারণে এই মাসের শেষ পর্যন্ত রিভার র্যাফটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, হিমালয়ের উঁচু এলাকাগুলিতে ভারী বৃষ্টির ফলে গঙ্গার জল বিপজ্জনক হারে বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণে আগেভাগেই শেষ করে দেওয়া হল র্যাফটিং সিজ়ন, যা সাধারণত জুনের শেষ পর্যন্ত চলে।
গঙ্গা নদীর র্যাফটিং ব্যবস্থাপনা কমিটির তরফে মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিবপুরী, কৌদিয়ালা এবং ব্রহ্মপুরী— এই তিনটি প্রধান প্রবেশপথে সমস্ত র্যাফটিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে র্যাফটিং শুধু ব্রহ্মপুরী থেকে খার্সালি পর্যন্ত সীমিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে।
এক সরকারি আধিকারিক বলেন, “নদীর স্রোত অত্যন্ত অনির্দিষ্ট এবং বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত জরুরি ছিল।” পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং বর্ষা কমলে ১৫ সেপ্টেম্বরের পর আবার র্যাফটিং শুরু হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। রাজ্য পর্যটন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এই মরসুমে ২.৬৪ লক্ষেরও বেশি পর্যটক র্যাফটিংয়ে অংশ নিয়েছেন, যার মধ্যে সর্বাধিক ভিড় হয়েছে এপ্রিল মাসে।
ভারি বৃষ্টিতে দুর্ঘটনা ও ধস
র্যাফটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে, যখন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় টানা বৃষ্টিতে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাজস্থানের একদল তীর্থযাত্রীকে বহনকারী একটি বাস বদ্রীনাথ হাইওয়ের ঘোলতীর গ্রামের কাছে আলকানন্দা নদীতে পড়ে যায়। ঘটনায় অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার কাজ চলছে।
একই দিনে, যমুনোত্রীর পথে কাইঁচি ভৈরব মন্দিরের কাছে ধস নামার ফলে দু’জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আরও একজন আহত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন এবং চিকিৎসাধীন।
আবহাওয়া আরও খারাপ হতে পারে
এদিকে, ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, সপ্তাহান্ত জুড়ে ঋষিকেশ ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া চলবে। শুক্রবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সঙ্গে ছিল দমকা হাওয়া ও বজ্রঝড়, যা গঙ্গার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
প্রশাসনের তরফে সমস্ত তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের উদ্দেশে সতর্কতা জারি করা হয়েছে— যেন কেউ বিপজ্জনক বা দুর্বল এলাকায় না যান এবং সবরকম সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলেন।