শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ল কুলতলির নগেনাবাদে ঢুকে পড়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। মঙ্গলবার ভোর ৩টে ৩২ মিনিট নাগাদ বন দফতরের পাতানো ফাঁদে আটকা পড়ে বাঘটি। বন দফতর সূত্রে জানা গেছে, সবজি খেতের মধ্যে দুটি খাঁচা রাখা হয়েছিল, যেখানে টোপ হিসেবে রাখা হয় ছাগল। সেই টোপ খেতেই ধরা পড়ে বাঘটি।
বন দফতরের ডিএফও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, ধরা পড়া বাঘটি একটি পুরুষ, বয়স প্রায় ১০ বছর। প্রথমে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে, তারপর যদি পুরোপুরি সুস্থ থাকে, তবে এদিনই গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। কী কারণে বাঘটি লোকালয়ে চলে এসেছিল, সে বিষয়ে তিনি জানান, একাধিক কারণ থাকতে পারে—অনেক সময় বাঘের সংখ্যা বেশি হলে স্থানচ্যুত হয়ে কিছু বাঘ গ্রামাঞ্চলে চলে আসে, আবার কখনও নিজেদের মধ্যে মারামারির ফলেও তারা জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে।
গত কয়েকদিন ধরেই নগেনাবাদ-সহ আশপাশের গ্রামবাসীরা তীব্র আতঙ্কে ছিলেন। রবিবার বিকেলে প্রথমবার বাঘটিকে দেখতে পান স্থানীয় যুবক রাজকুমার সাঁপুই। এরপর গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে জঙ্গলে গিয়ে বাঘের পায়ের ছাপ খুঁজে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে বন দফতরকে খবর দেওয়া হয়। বন কর্মীরা দ্রুত এলাকায় পৌঁছে রাতেই গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে নাইলনের জাল লাগিয়ে দেয়, যাতে বাঘটি গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।
বাঘটিকে ধরার চেষ্টা চলাকালীন সোমবার সকালে হঠাৎ টাইগার টিমের সদস্য গণেশ শ্যামলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘটি। তার ঘাড়ে কামড় বসায় এবং একটি চোখ গুরুতর আহত হয়। সহকর্মীরা লাঠি দিয়ে বাঘটিকে আঘাত করে গণেশকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। অবশেষে বাঘটি গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়, আর গুরুতর আহত গণেশকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বারবার লোকালয়ে বাঘ চলে আসা নিয়ে বন দফতরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এপিডিআরের জেলার সহ-সম্পাদক মিঠুন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘প্রশিক্ষিত বন কর্মীদের না পাঠিয়ে লাঠি হাতে অস্থায়ী বন কর্মীদের দিয়ে বাঘ তাড়ানোর কাজ করানো হচ্ছে। এতে তাঁদের জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে।’’